Golpoburo | গল্পবুড়ো | সুনির্মল বসু

Golpoburo ,গল্পবুড়ো
গল্পবুড়ো

সুপ্রিয় শিক্ষার্থীরা আশা করি তোমরা সকলেই ভালো আছো এবং তোমাদের পড়াশোনা যথারীতি চলছে। আমরা তোমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী, আমরা চাই তোমাদের সর্বাঙ্গীণ শিক্ষা ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। শিক্ষার গতিকে অব্যাহত রাখতে তোমাদের পাশে ছায়া-কায়ার মত অবস্থান করবো। তাই আজকের পর্বে পঞ্চম শ্রেণীর সুনির্মল বসু রচিত গল্পবুড়ো কবিতার সম্পূর্ণ অনুশীলনীর ব্যাখ্যাসহ উত্তর পেশ করলাম।

আমাদের Digital Porasona - র Online Educational Platform- এ  তোমাদের স্বাগত ।এখানে তোমরা সমস্ত শ্রেণীর অধ্যায়ভিত্তিক পাঠ ও অনুশীলনীর ব্যাখ্যা এবং English Grammar ও বাংলা ব্যাকরণ এর সাবলীল আলোচনা পাবে । তবে আর দেরি না করে আজকের পাঠে আলোকপাত করি।

গল্পবুড়ো 

সুনির্মল বসু

বইছে হাওয়া উত্তুরে;

গল্পবুড়াে থুত্থুড়ে

চলছে হেঁটে পথ ধরে

শীতের ভােরে সত্বরে;

চেঁচিয়ে যে তার মুখ ব্যথা

‘রূপকথা চাই, রূপকথা—

ডাক ছেড়ে সে ডাকছে রে—

বলছে ডেকে হাঁক ছেড়ে

‘ঘুম ছেড়ে আজ ওঠ তােরা,

আয় রে ছুটে ছােউরা-

কী আছে মাের তল্পিটায়।

দেখবি যদি জলদি আয়।

কাধের উপর এই ঝােলা-

গল্প-ভরা মন ভােলা,

দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ,

রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ,

মনপবনের দাঁড়খানা-

আজগুবি সব কারখানা

ভর্তি আমার তল্পিটায়,

দেখবি যদি, জলদি আয়।

কড়ির পাহাড় সার-বাঁধা—

মানিক-হীরা চোখ ধাঁধা

সােনার কাঠি ঝলমলে,-

ময়নামতী টলটলে—

তেপান্তরের মাঠখানা-

হট্টমেলার হাটখানা—

আটকাল এই তল্পিটায়,

দেখবি যদি জলদি আয়।

কেশবতী নন্দিনী

এই থলেতে বন্দিনি।

শীতের প্রখর প্রত্যুষে-

আসবে না যে শত্রু সে-

ভাঙব তাদের মূর্খতা-

বলব নাকো রূপকথা।

গল্পবুড়ো কবিতার কবি পরিচিতি-

সুনির্মল বসু ১৯০২ সালের ২০ই জুলাই ভারতের বিহারের গিরিডি নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক নিবাস ছিল মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরের মালখা নগর। পিতার নাম পশুপতি বসু। সাহিত্যিক গিরিশচন্দ্র বসু ছিলেন তার পিতামহ। সাঁওতাল পরগণার মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ তাঁর মনে কবিতা রচনার প্রেরণা দান করে । তার রচিত প্রথম কবিতা 'প্রবাসী' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।  সরস শিশু সাহিত্য রচনা এবং সৃজনশীল কবি প্রতিভা ছিল তার এক বিশেষ গুণ । কবিতা রচনার পাশাপাশি তিনি চিত্র অঙ্কনে ও দক্ষ ছিলেন। 

পাটনার গিরিডি স্কুল থেকে ১৯২০ সালে সুনির্মল বসু ম্যাট্রিক পাস করেন। পরবর্তীকালে তিনি কলকাতার সেন্ট পলস কলেজে ভর্তি হন।  এরপর অবনীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত আর্ট কলেজে ভর্তি হন। 

কিশোরদের উপযোগী বিভিন্ন বিষয়ক রচনায় তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তার উল্লেখযোগ্য রচনা হল - 

  • হাওয়ার দোলা (১৯২৭), 
  • ছানাবড়া, বেড়ে মজা, হৈ চৈ, 
  • ছন্দের টুংটাং (১৯৩০),টুনটুনির গান, 
  • বীর শিকারী ইত্যাদি। 

এছাড়া তিনি ১৯৫৫ সালে আত্মজীবনী লিখেছিলেন জীবনখাতার কয়েক পাতা

১৯৫৬ সালে তিনি ভুবনেশ্বরী পদক লাভ করেন। 

১৯৫৭ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি এই মহান পুরুষের তিরোধান ঘটে।

গল্পবুড়ো কবিতার সারমর্ম-

গল্পবুড়ো কবিতায় বর্ণিত হয়েছে এক গল্প বুড়োর কান্ড কারখানা।শীতকালের ভোরে যখন উত্তরে হাওয়া বইছিলো, তখন কাঁধে ঝোলা নিয়ে গল্পবুড়ো আসে। গল্প বুড়োর ঝোলায় থাকে নানা রকমের রূপকথার কাল্পনিক চরিত্র ও ঘটনার বর্ণনা। রূপকথা চাই রূপকথা বলে গল্পবুড়ো চিৎকার করে খুদে ছোট বাচ্চাদের ডাকে। ছেলেরা আগ্রহে ছুটে আসে তার ঝোলার ভিতরে কি আছে জানার জন্য। বুড়ো ঝোলাতে যেসব গল্পসম্ভার এর স্টক নিয়ে এসেছে তা হল- তেপান্তরের মাঠ, হট্টমেলার হাট, কেশবতী নন্দিনী, সোনার কাঠি রুপোর কাঠি ইত্যাদি।আরো বলে যে, যারা অলস, বিছানা ছেড়ে গল্প শুনতে উপস্থিত হবে না তাদের সে রূপকথার গল্প শোনাবে না।

গল্পবুড়ো কবিতার অনুশীলনীর প্রশ্ন-উত্তর

১. ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখ :

১.১. উত্তুরে হাওয়া বলতে বোঝায় হাওয়া যখন উত্তর দিক থেকে বয়ে আসে। এমনভাবে ___(গ্রীষ্ম/ শরৎ/ শীত/ বর্ষা) কালে হাওয়া বয়। 

উত্তর :-শীত 

১.২. থুত্থুরে শব্দটির অর্থ__( চনমনে /জড়োসড়ো/ জ্ঞানী/ নড়বড়ে)

উত্তর- নড়বড়ে। 

১.৩. রূপকথার গল্পে যেটি থাকে না___( দৈত্য দানব/ পক্ষীরাজ /রাজপুত্তুর/ উড়োজাহাজ)।

উত্তর-উড়োজাহাজ। 

১.৪. রূপকথার গল্প সংগ্রহ করেছেন এমন একজন লেখক এর নাম বেছে নিয়ে লেখো। (আশাপূর্ণা দেবী/ দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার/ সত্যজিৎ রায়/ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)।

উত্তর- দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার

২.১. লেখালেখি ছাড়াও সুনির্মল বসু আর কোন কাজ ভালো পারতেন?

উত্তর- ছবি আঁকতে পারতেন। 

২.২. তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।

উত্তর- তার লেখা দুটি বইয়ের নাম হল- ছানাবড়া ও বীর শিকারি।

৩. এলোমেলো বর্ণগুলি কে সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো:

 থা  রু  ক  প;

উত্তরঃ - রূপকথা। 

র  ত্তু  জ  রা  পু;

উত্তরঃ - রাজপুত্তুর

জ  ক্ষী রা প;

উত্তরঃ - পক্ষীরাজ। 

ব  প  ম  ন  ন;

উত্তরঃ - মনপবন। 

জ   গু   বি   আ;

উত্তরঃ - আজগুবি

8) অন্ত্যমিল আছে এমন পাঁচজোড়া শব্দ কবিতা থেকে খুঁজে নিয়ে লেখ। একটি করে দেওয়া হলো। উদাহরণ বাঁধা, ধাঁধা।

উত্তর- ১) উত্তুরে, থুত্থুরে ২) ঝোলা ,ভোলা ৩) যক্ষীরাজ, পক্ষীরাজ ৪) নন্দিনী ,বন্দিনী ৫) ঝলমলে, টলটলে।

৫.১ শীতকালে হাওয়া বইছে।(কেমন হওয়া)

উত্তর শীতকালে উত্তুরে হাওয়া বইছে।

৫.২ গল্পবুড়ো ডাকছে (কেমন বুড়ো?)

উত্তর- থুত্থুরে গল্পবুড়ো ডাকছে।

৫.৩ গল্পবুড়ো মুখ ব্যথা।(মুখ ব্যথা কেন?)

উত্তর- 'রূপকথা চাই, রূপকথা'- এই গল্পে চেঁচিয়ে গল্পবুড়োর মুখ ব্যথা।

৫.৪ গল্প বুড়োর ঝোলা আছে। (কোথায় ঝোলা?)

উত্তর- গল্পবুড়োর কাঁধে ঝোলা আছে।

৫.৫ দেখবি যদি আয়। (কিভাবে আসবে?)

উত্তর- দেখবি যদি  জলদি আয়।

dan bam

Answer-
bam dan

৭) 'ডাকছে রে'আর 'ডাক ছেড়ে' শব্দ জোড়ার মধ্যে কি পার্থক্য তা দুটি বাক্য রচনা করে দেখাও।

উদাহরণ- বাছুরটি ডাক ছেড়ে মাকে ডাকছে রে।

উত্তর-  ডাক ছেড়ে - ছোট ছেলেটা ডাক ছেড়ে কাঁদছে ।

ডাকছে রে - সীতাকে তার বাড়িতে ডাকছে রে।

৮) শব্দ ঝুড়ি থেকে নিয়ে বিশেষ্য ও বিশেষণ আলাদা করে লেখো।

উত্তর- বিশেষ্য - তল্পি, ঝোলা, শীত, রাজপুত্তুর, কারখানা, জলদি, সত্বর।

বিশেষণ- উত্তুরে, থুত্থুরে,আজগুবি

৯) পক্ষীরাজ এর মতো( ক্ +ষ্= ক্ষ) রয়েছে এমন পাঁচটি শব্দ তৈরি করো।

উত্তর- বৃক্ষ, শিক্ষা, রক্ষা, পক্ষ, বক্ষ।

১০) ক্রিয়ার নিচে দাগ দাও।

১০.১) বইছে হাওয়া উত্তুরে।

উত্তর - বইছে হাওয়া উত্তুরে।

১০.২) ডাক ছেড়ে সে ডাকছে রে ।

উত্তর- ডাক ছেড়ে সে ডাকছে রে ।

১০.৩) আয়রে ছুটে ছোট্টরা।

উত্তর - আয়রে ছুটে ছোট্টরা।

১০.৪) দেখবি যদি জলদি আয় ।

উত্তর- দেখবি যদি জলদি আয়

১ ০.৫) চেঁচিয়ে যে তার মুখ ব্যথা ।

উত্তর - চেঁচিয়ে যে তার মুখ ব্যথা।


Mehemud Ali

Mehemud Ali, an expert faculty of Bengali Grammar and Geography, love to teach.

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post