পরিবেশ গঠনের পদার্থের ভূমিকা | পরিবেশ ও বিজ্ঞান | Paribesh o Bigyan Class 7

 

পরিবেশ গঠনের পদার্থের ভূমিকা | পরিবেশ ও বিজ্ঞান
পরিবেশ গঠনের পদার্থের ভূমিকা | পরিবেশ ও বিজ্ঞান

সুপ্রিয় শিক্ষার্থীরা আশা করি তোমরা সকলেই ভালো আছো-সুস্থ আছো এবং আরো আশা করি তোমাদের পড়াশোনাও যথারীতি চলছে। সাম্প্রতিক সারাবিশ্বে COVID-19-এর করাল গ্রাসে যে আবহের সৃষ্টি হয়েছে, তাতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান-উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। তাই আমরা শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দিতে চাই সুষ্ঠ সাবলীল বিষয় উপযোগী শিক্ষা।Digital Porasona-র পক্ষ থেকে আজকের বিশেষ নিবেদন সপ্তম শ্রেণীর পরিবেশ ও বিজ্ঞান এর চতুর্থ অধ্যায়ের, পরিবেশ গঠনের পদার্থের ভূমিকা বিস্তারিত ও সহজ সরল আলোচনা।

তোমরা প্রত্যেকেই অবগত আছো যে, আমাদের Digital Porasona-র Online Portal- এ  সুষ্ঠ বিষয়োপযোগী ও সৃজনশীল শিক্ষা প্রদান করা হয়। আশা রাখি অদূর ভবিষ্যতে এই website Digital Porasona মারফত শিক্ষার্থীর সব রকমের অভাব মোচন হবে। তবে চলো আজকের পাঠে মনোনিবেশ করি। 

Class-7, Lesson-4, Part-1

class 7
সপ্তম শ্রেণি

পরিবেশ গঠনের পদার্থের ভূমিকা 

পরিবেশ গঠনের পদার্থের ভূমিকা | পরিবেশ ও বিজ্ঞান

পরিবেশ গঠনের পদার্থের ভূমিকা 

শর্করাকে জ্বালানি খাদ্য বলা হয় 

পর্ব ১ 

জীব দেহ গঠনে জৈব ও অজৈব পদার্থের ভূমিকা ঃ

জীব দেহ গঠনে জৈব ও অজৈব ভূমিকা অপরিসীম আমাদের দেহের মধ্যে অনেক ধরনের মৌল বর্তমান।

যেমন- অক্সিজেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম এছাড়াও আরো অনেক।

পৃথিবীর বেশিরভাগ জিনিস তৈরি হয়েছে 94 টি মৌল দিয়ে। তবে তার মধ্যে জীবদেহে ( মানবদেহে, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, সপুষ্পক উদ্ভিদ ও বিভিন্ন প্রাণী ) শুধুমাত্র 22 টি যৌগের নানা আকারের খোঁজ পাওয়া গেছে এখনো পর্যন্ত।

তবে আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ 4 টি মৌল লক্ষ্য করা যায়। 

সে গুলি হল - (১) N ➡ নাইট্রোজেন

 (২) C ➡ কার্বন

(৩) O ➡ অক্সিজেন

(৪) H ➡ হাইড্রোজেন

নিচে মৌলের নাম লেখ, যার মধ্যে প্রথম চারটি অধাতু ও পরের দুটি ধাতু।

১.  ...............   ২.  ................  ৩.  ..............  ৪.  ................  ৫.  ..............  ৬.  ...................

উত্তর- অধাতব মৌলের নাম–

১. হাইড্রোজেন

২.  অক্সিজেন

৩.  নাইট্রোজে

৪.  কার্বন

ধাতব মৌলের নাম–

৫. সোনা

৬.  রুপা

জৈব পদার্থ(Organic matter): যে সমস্ত পদার্থকে জীব থেকে পাওয়া যায় তাদেরকে জৈব পদার্থ বলা হয়।

যেমন-

অজৈব পদার্থ(Inorganic matter): যে সমস্ত পদার্থগুলো জীব দেহ থেকে পাওয়া যায় না তাদের অজৈব পদার্থ বলা হয়।

যেমন-

মানুষের দেহের মৌলের ওজনানুপাতিক শতাংশ

অক্সিজেন        65.0

পটাসিয়াম          0.4

কার্বন                 18.5

নাইট্রোজেন          3.3

সোডিয়াম             0.2

ফসফরাস             1.0

হাইড্রোজেন           9.5

ক্যালসিয়াম           1.5

পৃথিবীপৃষ্ঠে মৌলর ওজনানুপাতিক শতাংশ

পটাসিয়াম           2.6

সোডিয়াম            2.8

অক্সিজেন           46.6

অ্যালুমিনিয়াম     8.1

সিলিকন              27.7

কার্বন                  <1

আয়রন               5

ক্যালসিয়াম       3.6

জলের ভিতর উদ্ভিদ কিভাবে বেঁচে থাকে ?

 উত্তর- জলের ভিতর যে সমস্ত জলজ উদ্ভিদ থাকে বা প্রাণী বসবাস করে, সে গুলো জলের মধ্যে থাকা দ্রবীভূত কার্বন ডাই অক্সাইড এবং অক্সিজেন কে ,জলের মধ্যে দিয়ে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে আর সেই সূর্যের আলোকে কাজে লাগিয়ে তারা তাদের বিভিন্ন রাসায়নিক ও ক্রিয়া-কলাপ এর মাধ্যমে গ্লুকোজ জাতীয় খাদ্য তৈরি করে এবং তারা এভাবে তারা জীবন-যাপন করে জলের মধ্যে।

ঝিনুকের খোলস কিভাবে তৈরি হয় ?

উত্তর- ঝিনুকের খোলস ক্যালসিয়াম কার্বনেট দিয়ে তৈরি। 

ঝিনুকের খোলস
ঝিনুকের খোলস 

 জলের দ্রবীভূত ক্যালসিয়াম আয়ন ও কার্বন ডাই অক্সাইড কে কাজে লাগিয়ে ঝিনুকের মত বসবাসকারী প্রাণী শামুক ও যেন এই যৌগ গুলি কে কাজে লাগিয়ে তাদের শক্ত খোলস তৈরি করে শামুক, ঝিনুক এদের দেহের বাইরে শক্ত আবরণ কে ক্যালসিয়াম কার্বনেটকে বলা হয়, আর এভাবে তাদের খোলস তৈরি করতে সক্ষম হয়।

Iron (লোহ): মানুষ সহ বিভিন্ন প্রাণীর রক্ত তৈরি করতে আয়রন খুব প্রয়োজনীয় রক্তের লোহিত কণিকা কার হিমোগ্লোবিন ফেরাস । ISP ছাড়া গঠিত হতে পারে না তাই রক্ত হিমোগ্লোবিন ছাড়া গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে, তাই রক্তে হিমোগ্লোবিন একান্তই প্রয়োজন।

ক্যালসিয়াম: আমাদের দেহে হাড়ের কঙ্কাল আছে বলেই আমরা হাঁটাচলা, দৌড়ানো, ঝুঁকে পড়া এসব করতে পারে আর এর প্রধান উপাদান হলো ক্যালসিয়ামটির ফসফেট যৌগ এছাড়াও কোষের অনেক কাজ ক্যালসিয়াম আয়রন ছাড়া হতে পারে না।

সোডিয়াম ও পটাশিয়াম: কখনো পিঁপড়ে কামড়ালে বা সুড়সুড়ি দিলে সেই কোন ক্ষতি তৎক্ষণাৎ তো সরু তারের মত স্নায়ুর মধ্যে দিয়ে সুষুম্নাকাণ্ডের পৌঁছে যায়  স্নায়ুর মধ্যে দিয়ে। সংকেত যাওয়া আসা এসব ঠিকঠাকভাবে হতে হবে শরীরে ঠিক ঠিক মাত্রাই সাথে হতে পারে তার জন্য সোডিয়াম আয়ন আর পটাশিয়াম আয়ন না থাকলে সম্ভব হয়ে উঠতো না তখন মানুষ হাটতে গিয়ে পড়ে যেতে পারে, অজ্ঞানও হতে পারে।

শর্করাকে জ্বালানি খাদ্য বলা হয় কেন ?

 উত্তর- খাদ্য ধানের বীজ থেকে চারা বেরোনোর জন্য প্রয়োজনীয় আবহাওয়া ও শর্তাবলী জল,বায়ু রুদ্র - এই সমস্ত উপাদান প্রকৃতি থেকে পেলেও

অঙ্কুরোদগম হওয়ার জন্য বীজের অঙ্কুরোদগম বীজের মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় থাকার সময় যে প্রয়োজনীয় শক্তির প্রয়োজন হয় এই প্রয়োজনীয় শক্তি আসে শর্করা  জাতীয় খাদ্য থেকে। তাই শর্করাকে জ্বালানি খাদ্য বলা হয়।  

প্রোটিনের বৈশিষ্ট্য:

১) প্রোটিন হলো এক ধরনের যৌগ।

২) এককোষী জীব থেকে শুরু করে বৃহৎ প্রাণী সকলেরই কোষে দেখা যায়।

৩) প্রোটিন দেখা যায়- চুল, নক, রক্তের পেশিতে।  

৪) বিশেষ বিশেষ প্রোটিন আমাদের রোগ জীবাণু থেকে রক্ষা করে।

৫) প্রতিদিন আমাদের দেহের মধ্যে অবস্থিত রক্তের হিমোগ্লোবিন বিভিন্ন জায়গায় অক্সিজেন পৌঁছে দেয়।

৬) বিভিন্ন উৎসেচক এনজাইম আমাদের দেহে নানা ক্রিয়া( খাদ্য, পচন ,জীবাণু মেরে ফেলে) শক্তি উপাদান তাড়াতাড়ি ঘটাতে সাহায্য করে।

A. অতি সংক্ষেপে প্রশ্নের উত্তর দাও।

1. মোট মৌলের সংখ্যা কত ?

উত্তর- 94 টি।

2. মৌল গুলির মধ্যে কতটি জীবদেহে বিদ্যমান ?

উত্তর- 22টি।

 3. 100 গ্রাম ওজনের হাইড্রোজেন মানুষের দেহে কত শতাংশ বিদ্যমান ?

উত্তর- 9.5।

4. 100 গ্রাম ওজনের হাইড্রোজেন পৃথিবীপৃষ্ঠে কত শতাংশ বিদ্যমান ?

উত্তর- 2.8।

5. প্রধান চারটি মৌলের সংকেত কি কি ?

উত্তর- CHN.

6. গাছ কি জাতীয় খাদ্য তৈরি করে ?

উত্তর- শর্করা জাতীয় খাদ্য তৈরি করে।

7. জীবদেহের গঠনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যৌগ কোনটি ?

উত্তর- ক্যালসিয়াম, অ্যামাইনো এসিড।

8. ঝিনুকের খোলক কোন যৌগ থাকে ?

উত্তর- ক্যালসিয়াম।

9. একটি জলজ উদ্ভিদের নাম লেখ।

উত্তর- শ্যাওলা।

10. জলজ প্রাণীর নাম লেখ, যাদের ক্যালসিয়াম কার্বনেট বিদ্যমান।

 উত্তর- ঝিনুক।

B. সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লিখ।  

1) জলজ উদ্ভিদ হল (শাল গাছ  / শ্যাওলা  / থানকুনি /  কচু গাছ )।

উত্তর- শ্যাওলা।

2) জলজ প্রাণী নয় (মাছ  / টিকলি পোকা/  কুকুর/  শামুক )।

উত্তর- কুকুর। 

3) ক্যালসিয়াম থাকে (মাংস /নখে /চামড়ায়/ হাড়ে )।

উত্তর- হাড়ে

4) ছোট মাছে থাকে-(পটাশিয়াম/ ক্যালশিয়াম/ আয়রন/ কার্বনেট )।

উত্তর- ক্যালশিয়াম।

5) ক্যালসিয়াম কার্বনেট এর সংকেত-(CaCo3/ CaCo/ Co2/ CC )।

উত্তর- CaCo3.

C. সত্য মিথ্যা যাচাই করে লেখ-

1) কোন উদ্ভিদ বা প্রাণীর বংশগতির দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করে প্রোটিন।

উত্তর- মিথ্যা,(কোন উদ্ভিদ এবং প্রাণী এর বংশধারা নিয়ন্ত্রণ করে নিউক্লিক অ্যাসিড এর মাধ্যমে)

2) স্ত্রীলোকদের তুলনায় পুরুষদের দেহে প্রায় 10 শতাংশ বেশি জল থাকে।

উত্তর- সত্য,(পুরুষদের দেহে জলের পরিমাণ বেশি থাকে )।

3) ওজনের শতাংশের বিচারে বয়স্কদের তুলনায় প্রাপ্ত বয়স্কদের ওজনের জলের পরিমাণ বেশি থাকে।

উত্তর- মিথ্যা,(শিশুদের জলের পরিমাণ বেশি থাকে প্রাপ্তবয়স্কদের জলের পরিমাণ এর তুলনায়)।

4) ওজনের শতাংশের বিচারে সুস্থ লোকের দেহের মোট লোকেদের তুলনায় বেশি থাকে।

উত্তর- মিথ্যা,(ওজনের তুলনায় রোগা লোকেদের দেহের মোটা লোক এদের তুলনায় জল বেশি পরিমাণে থাকে)।

5) একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দেহের ওজন প্রায় 40 শতাংশ।

উত্তর- মিথ্যা,(একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দেহে ওজনের প্রায় 60 শতাংশ জল থাকে)।

D. শূন্যস্থান পূরণ করো-

 1) ..............মাছ খাওয়া ভালো এতে ক্যালসিয়াম আছে ?

উত্তর- ছোট। 

2) অ্যালুমিনিয়াম .............শতাংশ পৃথিবীর পৃষ্ঠে মৌল পরিমাণ বিদ্যমান।

উত্তর- 8.1.

3) জলজ উদ্ভিদ ..................থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করে।

উত্তর- জলের মধ্যে দ্রুতবীভূত থাকা অক্সিজেন অক্সিজেন অনু সংগ্রহ করে খাদ্য তৈরি করে।

4) উদ্ভিদ .....................প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি করে।

উত্তর- সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া।

5) মাছের .....................ক্যালসিয়াম বেশি থাকে।

উত্তর- মাছের কাটায়  ক্যালসিয়াম বেশি থাকে

E. ডান দিক ও বাম দিক মিলাও।

 ডান স্তম্ভ

1. ফসফরাস

2. কার্বন

3. ম্যানগ্রোভ জাতীয় উদ্ভিদ

4. রাত্রে বেলায় শিকার করতে পারে এমন প্রাণী

5. শুকনো আর গরমে অঞ্চলে বা উষ্ণ অঞ্চলের জন্মায় 

বাম স্তম্ভ

A. সুন্দরী, গরান ,গেওয়া

B. পেঁচা

C. 1.0

D. ফনিমনসা

E. 18.5%

উত্তর- 

ফসফরাস  C 1.0

কার্বন  E 18.5%

ম্যানগ্রোভ জাতীয় উদ্ভিদ  সুন্দরী, গরান, গেওয়া

রাত্রে বেলায় শিকার করতে পারে এমন প্রাণী  B পেঁচা

শুকনো আর গরমে অঞ্চলে বা উষ্ণ অঞ্চলের জন্মায়  D ফনিমনসা

সাধারণ অভিজ্ঞতা থেকে আম্লীক ও ক্ষারীয় দ্রাব্য সনাক্তকরণ

তোমাদের যদি উপরোক্ত প্রশ্ন, ব্যাখ্যা, আলোচনা বুঝতে অসুবিধে হয়, তাহলে তোমরা নিচে Comment Box-এগিয়ে আমাদের খুব শীঘ্রই জানিয়ে দাও। আমরা তার সমাধান নিয়ে তোমাদের সম্মুখে তুলে ধরব।তোমাদের যদি পরিবেশ ও বিজ্ঞান-এর চতুর্থ অধ্যায়ের 'পরিবেশ গঠনের পদার্থের ভূমিকা', প্রোটিনের বৈশিষ্ট্য', 'শর্করাকে জ্বালানি খাদ্য বলা হয়'-নিয়ে কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে তোমরা Comment Box গিয়ে জানাতে ভুলবে না, আমরা তার উত্তর দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি।  

সুস্থ থেকো ভালো থেকো ও মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকো।

Sajahan Seikh

Sajahan Seikh. From a young age he became very curious about the various animals of the environment and their life cycle. So he has been very interested in reading life science since he was young and he likes it very much, his favorite subject is life science. He is currently an experienced biology teacher.

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post