![]() |
সমাস |
{tocify} $title={Table of contents}
সমাস কাকে বলে?
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত অর্থসম্বন্ধযুক্ত
একাধিক পদের একটি পদে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে সমাস বলে।
সমাস শব্দের অর্থ কী?
$ads={1}
সমাস শব্দের
আক্ষরিক অর্থ হল- ‘এক হওয়া’ বা সংক্ষেপ। সমাসের ব্যাকরণ সম্মত অর্থ হল 'একপদীকরণ'।
ব্যাসবাক্য কাকে বলে?
যে বাক্যাংশ থেকে সমাসের মাধ্যমে নতুন শব্দ তৈরি হয়, তাকে বলা হয় ব্যাসবাক্য। যেমন- খাতা-পত্র= খাতা ও পত্র।
সমস্ত পদ কাকে বলে?
ব্যাসবাক্য
থেকে সমাসের মাধ্যমে যে নতুন শব্দ তৈরি হয়, তাকে বলা হয় সমস্ত পদ। যেমন- খাতা-পত্র=
খাতা ও পত্র।
সমস্যমান পদ কাকে বলে?
যে সকল পদ একাত্রিত হয়ে সমাস সংগঠিত হয় তাদের প্রত্যেকটি পদকে সমস্যমান পদ বলে।
পূর্বপদ কাকে বলে?
সমস্যমান পদ গুলির মধ্যে যেটি আগে আসে, তাকে পূর্বপদ বলা হয়।
যেমন- খাতা-পত্র। এই বাক্যে পূর্বপদটি হল-খাতা।
$ads={2}
উত্তরপদ কাকে বলে?
পূর্বপদের পরে ব্যাসবাক্য যে সমস্যমান পদটি আসে তাকে উত্তর পদ বলা হয়।
যেমন- খাতা-পত্র। এই বাক্যে উত্তর পদটি হল- পত্র।
সমাসের প্রকারভেদ
সমাস সাধারণত নয় রকম যথা-
১) দ্বন্দ্ব সমাস
২) কর্মধারায়
সমাস
৩) বহুব্রীহি সমাস
৪) তৎপুরুষ সমাস
৫) দ্বিগু সমাস
৬) অব্যয়ীভাব
সমাস
৭) নিত্য সমাস
৮) অলোপ সমাস
৯) বাক্যাশ্রয়ী সমাস
দ্বন্দ্ব সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যদি ব্যাসবাক্যের দুটি সমস্যমান পদ থাকে, দুটি পদের অর্থই
প্রধান হয় এবং সমস্যমান পদ দুটি একটি সংযোজক অব্যয় দ্বারা যুক্ত থাকে,তবে এ রকম
সমাসকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে।
$ads={1}
দ্বন্দ্ব সমাস সাধারণত নয় রকম
যথা-
১) সমার্থক দ্বন্দ্ব
২) বিপরীতার্থকদ্বন্দ্ব
৩) বিকল্পর্থক দ্বন্দ্ব
৪) সমাহার দ্বন্দ্ব
৫) মিলনার্থক দ্বন্দ্ব
৬) অলুক দ্বন্দ্ব
৭) বহুপদী দ্বন্দ্ব
৮) একশেষ দ্বন্দ্ব
৯) অর্থবোধক দ্বন্দ্ব
👉 সমার্থক দ্বন্দ্ব কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
সমস্যমান পদ গুলি যখন পরস্পর সমার্থক হয়।
যেমন- কাজ-কর্ম= কাজ ও কর্ম।
👉 বিপরীতার্থক দ্বন্দ্ব
কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
সমস্যমান পদ দুটি যখন একে অপরের বিপরীতার্থক
হয়।
যেমন- দিন-রাত=দিন ও রাত।
👉 বিকল্প
দ্বন্দ্ব কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে দ্বন্দ্ব
সমাসে পূর্বপদ ও পরপদের অর্থ বিকল্প হিসাবে
ব্যবহৃত হয়।
যেমন- হারজিত=হার অথবা জিৎ।
👉 সমাহার দ্বন্দ্ব কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
সমস্যমান পদগুলির প্রতিটি অর্থ প্রধান না হয়ে সমষ্টিগত পদের
অর্থই যখন প্রধান হয়।
যেমন- দুধ- কলা=দুধ ও কলা।
👉 মিলনার্থক দ্বন্দ্ব কাকে বলে? উদাহরন দাও।
দুই ব্যক্তি বা বস্তুর মিলন বোঝাতে যে দ্বন্দ্ব সমাস হয়।
যেমন- মাসি- পিসি= মাসি ও পিসি।
👉 বহুপদীদ্বন্দ্ব কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে দ্বন্দ্ব সমাস বহু পদের মিলনে নিষ্পন্ন হয়।
যেমন- রূপ- রস- গন্ধ- স্পর্শ= রূপ, রস, গন্ধ ও স্পর্শ।
👉 অলুক দ্বন্দ্ব কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে দ্বন্দ্ব সমাসের সমস্যমান পদের বিভক্তি লোপ পায় না তাকে
অলুক দ্বন্দ্ব সমাস বলে।
যেমন- কাগজে- কলমে= কাগজে ও কলমে।
👉 একশেষ দ্বন্দ্ব কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে দ্বন্দ্ব সমাসের সুনিদৃষ্ট পূর্বপদ ও পরপদ থাকে না, কিন্তু
দুই পদ সমান অর্থবোধক সর্বনাম দ্বারা সমাসটি গঠিত হয়ে থাকে তাকে একশেষ দ্বন্দ্ব সমাস
বলে।
যেমন- আমরা= আমি, তুমি ও সে।
👉 অর্থবোধক দ্বন্দ্ব কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
অনুরূপ বা সমজাতীয় ভাবপ্রকাশের জন্য অনুচর, সহচর, প্রতিচর,
বিকার, অনুকার প্রভৃতি অর্থপ্রকাশক শব্দের মিলনে এই সমাস হয়।
যেমন- কাজ টাজ=কাজ ও টাজ।
$ads={2}
কর্মধারায় সমাসের প্রকারভেদ
বিশেষ্যের সাথে বিশেষণের সমাসকে কর্মধারায় সমাস বলে।
কর্মধারায় সমাস সাধারণত পাঁচ রকম যথা-
১) সাধারণ কর্মধারায়
২) মধ্যপদলোপী কর্মধারায়
৩) উপমিত
কর্মধারায়
৪) উপমান কর্মধারায়
৫) রুপক কর্মধারায়
👉 সাধারণ কর্মধারায় সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
বিশেষণ
ও বিশেষ্যে বা বিশেষ্যে ও বিশেষ্যে বা বিশেষণ ও বিশেষণে যে কর্মধারায় সমাস হয়, তাকে সাধারণ কর্মধারায় সমাস বলে।
যেমন- নীলাকাশ = নীল
যে আকাশ।
পিতাঠাকুর = যিনি
পিতা তিনিই ঠাকুর।
রাজাবাদশা = যিনি
রাজা তিনিই বাদশা।
মহারাজা = মহান যে রাজা।
সহজসরল = যা সহজ তা-ই সরল।
কাঁচামিঠা = কাঁচা অথচ মিঠা।
রাজর্ষি = যিনি রাজা তিনিই ঋষি।
👉 মধ্যপদলোপী কর্মধারায় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে
কর্মধারায় সমাসে ব্যাসবাক্যের মধ্যপদ বা পদগুলি লোপ পায়, তাকে মধ্যপদলোপী কর্মধারায় বলে।
যেমন- সিংহাসন = সিংহ চিহ্নিত আসন।
অর্থমন্ত্রী = অর্থ বিষয়ক মন্ত্রী।
জয়ধ্বনি = জয় সূচক ধ্বনি।
হিমালয়পর্বত = হিমালয়
নামক পর্বত।
মৌমাছি = মৌ সঞ্চয়কারী মাছি।
গঙ্গানদী = গঙ্গা
নামক নদী।
👉 উপমিত কর্মধারায়
কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে সমাসে
পুর্বপদ উপমেয় এবং পরপদ উপমান হয় তাকে উপমিত কর্মধারায় বলে।
যেমন- মুখচন্দ্র = মুখ
চন্দ্রসদৃশ।
সোনামুখ = মুখ
সোনার মতো।
চরণপদ্ম = চরণ পদ্মের মতো।
ফুলকপি = কপি ফুলের
মতো।
আমসন্দেশ = সন্দেশ
আমের মতো।
পুরুষসিংহ = পুরুষ সিংহের মতো।
👉 উপমান কর্মধারায়
কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উপমান পদের
সঙ্গে সাধারণ- ধর্মবাচক পদের যে সমাস হয় তাকে উপমান কর্মধারায় বলে।
যেমন- শশব্যস্ত = শশের
ন্যায় ব্যস্ত।
ফুটিফাটা = ফুটির
মতো ফাটা।
চন্দনস্নিগ্ধ = চন্দনের
মতো স্নিগ্ধ।
গোবেচারা = গো-র
মতো বেচারা।
হস্তীমূর্খ = হস্তীর মতো মুখ।
বজ্রকঠিন = বজ্রের
মতো কঠিন।
$ads={1}
👉 রুপক কর্মধারায় কাকে
বলে? উদাহরণ দাও।
যে কর্মধারায়
সমাসে উপমেয় এবং উপমানের মধ্যে অভেদ কল্পনা করা হয়, তাকে রুপক কর্মধারায় বলা হয়।
যেমন- দেশমাতৃকা = দেশ
রুপ মাতৃকা।
রোষানল = রোষ
রূপ অনল।
বিদ্যাধন = বিদ্যারূপ ধন।
ভবসিন্ধু = ভবরূপ সিন্ধু।
বহুব্রীহি সমাসের প্রকারভেদ
বহুব্রীহি সমাস কাকে বলে ?
যে সমাসের
পূর্বপদ ও পরপদ কারো অর্থ প্রাধান্য পায় না, সমস্ত পদের অর্থ প্রাধান্য পায়, তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে।
বহুব্রীহি সমাস সাধারণত সাত
রকম যথা-
১) সমানাধিকরন
বহুব্রীহি
২) ব্যাধিকরণ
বহুব্রীহি
৩) মধ্যপদলোপী
বহুব্রীহি
৪) সংখ্যাপূর্বক
বহুব্রীহি
৫) ব্যাতিহার
বহুব্রীহি
৬) না বহুব্রীহি
৭) সহার্থক
বহুব্রীহি
👉 সমানাধিকরণ বহুব্রীহি কাকেবলে? উদাহরণ দাও।
বহুব্রীহি সমাসের পূর্বপদ বিশেষণ ও পরপদ
বিশেষ্য হলে তাকে সমানাধিকরণ বহুব্রীহি বলে।
যেমন- সুগন্ধ = সু গন্ধ যার।
বিশালাকার = বিশাল
আকার যার।
গৌরাঙ্গ
= গৌর অঙ্গ যার।
মধ্যবিত্ত = মধ্য
বিত্ত যার।
দশানন = দশ আনন
যার।
হীনশক্তি = হীন শক্তি
যার।
বিলোচন
= বিশিষ্ট লোচন যার।
👉 ব্যধিকরণ বহুব্রীহি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে বহুব্রীহি সমাসের পূর্বপদ ও পরপদের বিভক্তিচিহ্ন আলাদা হয়, তাকে ব্যধিকরণ বহুব্রীহি বলে।
যেমন- মধুকণ্ঠ = মধু কন্ঠে
যার।
হাসিমুখ = হাসি মুখে
যার।
ইত্যাদি = ইতি আদিতে
যার।
পাপমতি = পাপে মতি
যার।
পদ্মনাভ = পদ্ম
নাভিতে যার।
বীণাপাণি = বীণা
পাণিতে যার।
রত্নগর্ভা = রত্ন গর্ভে যার।
$ads={2}
👉 মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে বহুব্রীহি সমাসে ব্যাসবাক্যের মধ্যস্থিত পদ
লোপ পেলে,
তাকে বলা হয় মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি বলে।
যেমন- বাঁদরমুখো = বাঁদরের
মতো মুখ যার।
বিড়ালাক্ষী = বিড়ালের অক্ষির
বর্ণের ন্যায় অক্ষি যার।
সোনামুখী = সোনার মতো
মুখ যার।
মৃগনয়না = মৃগের
নয়নের ন্যায় চঞ্চল নয়ন যার।
👉 সংখ্যাপূর্বক বহুব্রীহি কাকে
বলে? উদাহরণ দাও।
যে বহুব্রীহি সমাসে সংখ্যার প্রসঙ্গ থাকলেও তা বিশেষ
ব্যক্তি বা বস্তুর সংখ্যা বোঝাতে ব্যবহৃত হয় তাকে সংখ্যাপূর্বক বহুব্রীহি বলে।
যেমন- চতুর্ভুজ = চার ভুজ
যার।
ষড়ানন = ষড়(ছটি) আসন
যার।
দ্বীপ = চার দিকে
জল বেষ্টিত স্থান যার।
চতুর্মুখ = চতুঃ(চার)
মুখ যার।
👉 ব্যতিহার
বহুব্রীহি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
পরস্পর একজাতীয় ক্রিয়ার বিনিময় বোঝাতে একই বিশ্যেষ্যের
দুবার ব্যবহারের মাধ্যমে যে বহুব্রীহি সমাস হয় তাকে ব্যতিহার
বহুব্রীহি বলে।
যেমন- গলাগলি = গলায়
গলায় যে মিল।
হাতাহাতি = হাতে
হাতে যে যুদ্ধ।
জানাজানি = পরস্পরকে
জানা।
লাঠালাঠি = লাঠিতে
লাঠিতে যে লড়াই।
👉 নঞর্থক বহুব্রীহি
কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
না-বোধক পদের সঙ্গে বিশ্যষ্য পদের যে বহুব্রীহি
সমাস হয় তাকে নঞর্থক বহুব্রীহি
বলে।
যেমন- অনন্ত = নেই
অন্ত যার।
অথই = নেই
থই যার।
নির্বিকল্প = নেই
বিকল্প যার।
বেইমান = নে
ইমান যার।
👉 সহার্থক বহুব্রীহি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
পূর্বপদের বিশেষ্যের সঙ্গে সহার্থক পরপদের যে বহুব্রীহি সমাস হয় তাকে সহার্থক বহুব্রীহি
বলে।
যেমন- সাবধান = অবধানের
সঙ্গে বিদ্যমান।
সক্রিয় = ক্রিয়ার
সঙ্গে বর্তমান।
সবেগ = বেগের
সঙ্গে বর্তমান।
সশ্রদ্ধ = শ্রদ্ধার
সঙ্গে বর্তমান।
তৎপুরুষ সমাস
‘তৎ’ শব্দের অর্থ হলো ‘তার’ এবং তৎপুরুষ শব্দের
অর্থ হলো “তার পুরুষ” । যে সমাসের
ব্যাসবাক্য সমস্যমান পদদুটির মধ্যে পরপদটি
প্রধান হয় এবং পূর্বপদের কারক বোধক অনুসর্গ লোপ পায়, তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন- রান্নাঘর- রান্নার জন্য ঘর।
এই ব্যাসবাক্যে রান্না ও ঘর এর মধ্যে ঘরের প্রাধান্য
আছে। ব্যাসবাক্যের জন্য অনুসর্গটি সমাস নিষ্পন্ন পদে লোপ পেয়েছে।
$ads={1}
তৎপুরুষ সমাসের প্রকারভেদ
তৎপুরুষ সমাস সাধারণত ১১ রকম যথা-
১) কর্ম তৎপুরুষ
২) করন তৎপুরুষ
৩)নিমিত্ত তৎপুরুষ
৪) অপাদান তৎপুরুষ
৫) সম্বন্ধ তৎপুরুষ
৬) অধিকরণ তৎপুরুষ
৭) না -তৎপুরুষ
৮) উপপদ তৎপুরুষ
৯) উপসর্গ তৎপুরুষ
১০) ক্রিয়া বিশেষণ তৎপুরুষ
১১) ব্যাপ্তি তৎপুরুষ
👉 কর্ম তৎপুরুষ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে
তৎপুরুষ
সমাসে পূর্ব পদের কর্ম কারক বোধক
বিভক্তি লোপ পায় তাকে কর্ম
তৎপুরুষ সমাস বলে ।
যেমন- ছেলে ভুলানো- ছেলেকে ভুলানো।
লোক ঠকানো- লোককে ঠকানো।
ঘাস কাটা- ঘাস কে কাটা।
বই পড়া- বইকে পড়া।
লুচি ভাজা- লুচি কে ভাজা।
বাসনধোয়া- বাসনকে ধোয়া।
👉 করন তৎপুরুষ সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদ
এর করণ কারক বোধক বিভক্তি ও অনুসর্গ লোপ পায় তাকে করন তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন- জ্ঞানহীন- জ্ঞান দ্বারা হীন।
নজরবন্দি- নজর দ্বারা বন্দি।
হাত ধরা- হাত দিয়ে ধরা।
পত্রাবৃত্- পত্র দিয়ে আবৃত।
বজ্রাহত- বজ্র দ্বারা আহত।
👉 নিমিত্ত তৎপুরুষ সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্ব
পদের নিমিত্ত কারক বোধক বিভক্তি ও অনুসর্গ লোপ পায় তাকে নিমিত্ত তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন- মালগাড়ি- মালের জন্য গাড়ি।
সংবাদপত্র- সংবাদের জন্য পত্র।
ফাঁসিকাঠ- ফাঁসির জন্য কাঠ।
লোকালয়- লোকের নিমিত্ত আলয়।
স্বদেশ প্রেম- দেশের জন্য প্রেম।
বালিকাবিদ্যালয়- বালিকাদের জন্য বিদ্যালয়।
👉 অপাদান তৎপুরুষ সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদে অপাদান কারক বোধক বিভক্তি
ও অনুসর্গ লোপ পায় তাকে অপাদান তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন- মায়া মুক্ত- মায়া থেকে মুক্ত।
জলাতঙ্ক- জল থেকে আতঙ্ক।
চাকভাঙা- চাক থেকে ভাঙা।
পাপ মুক্ত- পাপ থেকে মুক্ত।
বিলেত ফেরত- বিলেত থেকে ফেরত।
স্কুল পালানো- স্কুল থেকে পালানো।
$ads={2}
👉 অধিকরণ তৎপুরুষ সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্ব
পদে অধিকরণ কারক বোধক বিভক্তি লোপ পায় তাকে অধিকরণ তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন- বাক্স বন্দি- বাক্সে বন্দি।
গঙ্গাস্নান-গঙ্গায় স্নান।
রাতকানা- রাতে কানা।
বনবাস- বনে বাস।
গাছপাকা- গাছে পাকা।
👉 সম্বন্ধ তৎপুরুষ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদে
সম্বন্ধবোধক ও বিভক্তি লোপ পায় তাকে সম্বন্ধ তৎপুরুষ বলে।
যেমন- স্বাধীন-স্ব -এর অধীন।
কালিদাস- কালির দাস।
জগদীশ্বর- জগতের ঈশ্বর।
রাজপুত্র- রাজার পুত্র।
রাজ হংস- হংসের রাজা।
👉 না -তৎপুরুষ কাকে
বলে? উদাহরণ দাও।
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদ
না বাচক অব্যয় হয় এবং পরপদের অর্থ প্রাধান্য থাকে তাকে না -তৎপুরুষ বলে।
যেমন- অনাবৃত- নয় আবৃত।
অনেক- নয় এক।
গরমিল- নয় মিল।
বিদেশ- নয় দেশ।
আগাছা- নয় গাছা।
👉 উপপদ তৎপুরুষ কাকে
বলে? উদাহরণ দাও।
ধাতুর সঙ্গে প্রত্যয়
যোগে কৃদন্ত পদ হয় কৃদন্ত পদের পূর্বে যে-পদ বসে তাকে উপপদ তৎপুরুষ বলে
যেমন- ছেলেধরা- ছেলেকে ধরে যে।
মধুকর- মধু করে যে।
ঘুষ খোর- ঘুষ খায় যে।
ইন্দ্রজিৎ- ইন্দ্রকে জয় করে যে।
অরিন্দম- অরিকে দমন করে যে।
👉 ব্যাপ্তি তৎপুরুষ সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে তৎপুরুষ সমাসে স্থান
ও কালের ব্যাক্তি বা বিস্তার বোঝায় এবং পূর্বপদে ব্যাপ্তার্থ শব্দটি লোপ পায় তাকে
ব্যাপ্তি তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন- চির সুখী- চিরকাল ব্যাপী সুখী।
ক্ষণস্থায়ী- ক্ষণকাল ব্যাপী স্থায়ী।
👉 ক্রিয়া-বিশেষণ তৎপুরুষ সমাস
কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে তৎপুরুষ সমাসের পূর্ববর্তী
ক্রিয়া বিশেষণ হয় এবং পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায় তাকে ক্রিয়া-বিশেষণ তৎপুরুষ সমাস
বলে।
যেমন- দ্রুতগামী- দ্রত ভাবে গামি।
ঘনসন্নিবিষ্ট- ঘন ভাবে সন্নিবিষ্ট।
অর্ধ সমাপ্ত- অর্ধ ভাবে সমাপ্ত।
👉 উপসর্গ তৎপুরুষ সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে তৎপুরুষ সমাসের পূর্বপদ
উপসর্গের কাজ করে এবং তার সঙ্গে বিশেষ্য কিংবা বিশেষণ এর মত আচরণ করে পরপদের সমাস হয়
তাকে উপসর্গ তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন- প্রতিধ্বনি- প্রতি রূপ ধ্বনি।
বিজয়দা- বিজয় যে দা।
$ads={1}
দ্বিগু সমাস
‘দ্বিগু’ শব্দটির অর্থ হল দুটি গরুর
সমাহার । ব্যাকরণ এ সংখ্যা বাচক সমাস অর্থে ‘দ্বিগু’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
দ্বিগু সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে সমাসে
পূর্বপদ সংখ্যাবাচক বিশেষণ পরপদটি বিশেষ্য এবং সমাসবদ্ধ পদটির মাধ্যমে সমাহার
বোঝায়, তাকে দ্বিগু সমাস বলে।
যেমন -ত্রিশূল- ত্রিশূল এর সমাহার।
এখানে পূর্বপদ ত্রি একটি সংখ্যাবাচক বিশেষণ ও পরপদটি ‘শূল’ বিশেষ্য। সমাসবদ্ধ
হওয়ার পর ‘ত্রিশূল’ শব্দটি তিনটি শূলের সমষ্টি বোঝাচ্ছে।
দ্বিগু সমাসের প্রকারভেদ
১) তদ্ধিতার্থক দ্বিগু
২) সমাহার দ্বিগু
দ্বিগু সমাস সাধারণত দুই রকম যথা-
👉 তদ্ধিতার্থক দ্বিগু কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে সমাসের
সাহায্যে মূল অর্থ থেকে নতুন অর্থ নির্মাণ করা হয় তাকে তদ্ধিতার্থক দ্বিগু সমাস
বলে।
যেমন- পাঁচকড়ি- পাঁচ কড়ির বিনিময়ে কেনা।
তিনকড়ি- তিনকড়ির বিনিময়ে কেনা।
👉 সমাহার দ্বিগুকাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে দ্বিগু সমাসের
মাধ্যমে একাধিক বস্তু বা বিষয়ের সমাহার বা সমষ্টি বোঝায় তাকে সমাহার দ্বিগু বলে।
যেমন- ত্রিভুবন- ত্রি ভুবনের সমাহার।
সাত সমুদ্র- সাত সমুদ্রের সমাহার।
নবগ্রহ- নয় গ্রহের সমাহার।
শতাব্দী- শত অব্দের সমাহার।
অব্যয়ীভাব সমাস
👉 অব্যয়ীভাব সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যদি পূর্ব পদ কোন অব্যয় হয় এবং পরপদ বিশেষ্য হয় তবে
তাদের মধ্যে যে সমাস হয় তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে।
যেমন- গরমিল- মিলের অভাব।
এক্ষেত্রে ‘গরমিল’ শব্দের ‘গর’ পূর্বপদ
অব্যয় এবং পরপদটি’মিল’ বিশেষ্য।এদের সমাস ঘটেছে ।অব্যয়ীভাব সমাসের সবসময় পূর্বপদের
অর্থ প্রাধান্য থাকে।
বিভিন্ন অর্থে
অব্যয়ীভাব সমাস-
কাছে/সামীপ্য বোঝাতে-
উপগ্রহ- উপগ্রহের সমীপে।
অভাব বোঝাতে-
দুর্ভিক্ষ- ভিক্ষার অভাব।
সাদৃশ্য বা মিল বোঝাতে-
প্রতিধ্বনি- ধবনির সদৃশ্য।
বিপরীত বোঝাতে-
বিপক্ষ- পক্ষের বিপরীতে।
পক্ষেবোঝাতে-
অনুপ্রবেশ- প্রবেশের পক্ষে।
বিপ্সা বোঝাতে-
প্রতিদিন- দিন দিন।
ছোটো বোঝাতে-
উপসাগর- ছোটো সাগর।
সীমা বোঝাতে-
আমুল- মূল পর্যন্ত।
নিত্য সমাস
$ads={2}
👉 নিত্য সমাস কাকে বলে?
উদাহরণ দাও।
যে সমাসে সমস্যমান পদগুলি নিত্য বা সর্বদাই সমাসবদ্ধ থাকে, কোন ব্যাসবাক্য হয় না,
তাকে নিত্য সমাস বলে।
যেমন-
কালসাপ- কাল যে সাপ-হয়
না। কারণ কালসাপ একটি বিশেষ ধরনের সাপ সুতরাং কালসাপ
নিত্য সমাসের উদাহরণ।
নিত্য সমাসের প্রকারভেদ
নিত্য সমাস সাধারণত দুই রকম যথা-
১)
সর্বদায় সমাসবদ্ধ ব্যাসবাক্য হয় না এমন নিত্য সমাস-
যেমন- দাঁড় কাক (‘দাঁড়ে বসা
কাক’ হয়না)
২) অন্যপদের সাহায্যে গঠিত ব্যাসবাক্য-
যেমন-
দেশান্তর- অন্যদেশ
শোনা মাত্র- কেবল সোনা
চিহ্নমাত্র- শুধু চিহ্ন
গ্রামান্তর- অন্য গ্রাম
বাক্যাশ্রয়ী সমাস
👉 বাক্যাশ্রয়ী সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
কোন
বাক্যকে বা বাক্যখণ্ডকে সুসংহত রূপেএকটি মাত্র শব্দে পরিণত করে তাকে বিশেষ্য বা বিশেষণ
রূপ দিয়ে একটি বাক্যের অর্থ প্রকাশিত হলে তাকে বাক্যাশ্রয়ী সমাস বলে।
যেমন-
গল্প বলা -প্রতিযোগিতা- গল্পকে বলা (কর্ম তৎ), তার প্রতিযোগিতা (সম্বন্ধ তৎ)
অলোপ সমাস
👉 অলোপ
সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
যে সমাসে পূর্বপদের বিভক্তির চিহ্ন লোপ না পেয়ে
সমস্যমান পদের মত থেকে গেলে তাকে অলোপ সমাস বলে।
অলোপ সমাসের প্রকারভেদ
১) অলোপ দ্বন্দ্ব- ঝোপে ঝাড়ে- ঝোপে ও ঝাড়ে।
জলেজঙ্গলে- জলে ও জঙ্গলে
২) অলোপ তৎপুরুষ- সাপে
কাটা- সাপে কাটা
খেলার মাঠ- খেলার জন্য মাঠ
চোখের বালি- চোখের বালি
৩) অলোপ উপপদ- অন্তেবাসী- অন্তে বাস করে যে।
৪) অলোপ বহুব্রীহি- মুখে ভাত- মুখে ভাত দেওয়া হয় যে অনুষ্ঠানে।
$ads={1}
টেবিলের মাধ্যমে ব্যাসবাক্য সহ সমাসের নাম-
প্রশ্ন ও উত্তর
বহু বিকল্পীয় প্রশ্ন-
১) 'সমাস' শব্দের অর্থ হলো- ক) সংক্ষেপ খ) বিস্তার
গ) ব্যাখ্যা
২) ‘সিংহাসন’-কোন কর্মধারয় সমাসের উদাহরণ-
ক) উপমিত খ) রূপক
গ)
মধ্যপদলোপী
৩) যে সমাসে সমস্যমান পদ গুলির প্রত্যেকটিরই অর্থ প্রাধান্য থাকে তাকে বলা
হয়- ক) তৎপুরুষ সমাস খ) দ্বন্দ্ব সমাস গ) বহুব্রীহি সমাস
৪) বহুব্রীহি সমাস কয় শ্রেণীতে ভাগ করা যায়- ক) 5 খ)
7 গ) 8
৫) ‘দ্বিগু’ সমাসের পূর্ব পথটি হল- ক) সংখ্যাবাচক
খ) গুণবাচক গ) ব্যাক্তিবাচক
৬) ‘সমাস’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি হল- ক)
সম-আম+অ খ)সম-মা+স গ) সম-অস+অ
৭) উপপদ তৎপুরুষ সমাসে পূর্ব পদটি হয়- ক) বিশেষ্যপদ খ) সর্বনাম পদ গ) বিশেষণ পদ
৮) ‘উপনগরী’ সমাসটি গড়ে উঠেছে-
ক) সাদৃশ্যঅর্থে খ) সামীপ্যঅর্থে গ) বীপ্সা
অর্থে।
৯) পরপদটি প্রধান হয় যে সমাসে সেটি –
ক) দ্বিগু খ) বহুব্রীহি
গ) তৎপুরুষ
১০) ‘নীলকন্ঠ’ পদটি কোন সমাসের উদাহরণ- ক) বহুব্রীহি
খ) তৎপুরুষ গ) দ্বন্দ্ব ।
১১) যে কর্মধারয় সমাসে দুটি অসম জাতীয় বস্তু বা ব্যক্তির মধ্যে তুলনা বা
উপমার মাধ্যমে সাদৃশ্য কল্পনা করা হয় তাকে বলে – ক) রূপক কর্মধারয় খ) মধ্যপদলোপী কর্মধারয় গ) উপমান
কর্মধারয়
১২) “দাদা ঠাকুর” পদটি কোন সমাসের উদাহরণ- ক) দ্বন্দ্ব খ) তৎপুরুষ গ) সাধারণ
কর্মধারয়
$ads={2}
১৩) যে সমাসে সমাসবদ্ধ পদে পূর্বপদের অর্থ প্রাধান্য ঘটে তা হল – ক) অব্যয়ীভাব
খ) কর্মধারায় গ) বহুব্রীহি
১৪) ‘দশানন’ পদটি কোন সমাসের উদাহরণ- ক) বহুব্রীহি খ) তৎপুরুষ গ) দ্বন্দ্ব
১৫) এর মধ্যে কোনটি দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ – ক) ছেলে ধরা খ) গান-বাজনা গ) প্রতিধবনি
যদি সমাস সম্পর্কে তোমাদের কোনো অসুবিধা থাকে, তাহলে তোমরা নিচে Comment Box এ গিয়ে Comment করতে পারো। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব তোমাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার।
আমাদের Article ভালো লাগলে লাইক, শেয়ার ও Subscribe করতে পারো। যাতে তোমাদের অনুপ্রেরনাকে পাথেয় করে আরো নিত্যনতুন বিষয়ের উপর সহজতর, বোধগম্য ও চিত্তাকর্ষক লেখনী নিয়ে হাজির হতে পারি। ততক্ষন তোমরা সুস্থ থাকো, ভালো থেকো এবং এভাবেই পড়তে থাকো।
ধন্যবাদ
Valo sir
ReplyDeleteসমাস চিনবো কিভাবে ? এটা বললে ভালো হতো । যেমন যদি বলে বটবৃক্ষ ? এটা কিভাবে বুঝবো যে মধ্য পদলোপী কর্মধারয় সমাস ???
Delete