![]() |
বিশেষণ পদ |
সুপ্রিয় শিক্ষার্থীরা, আশা করি তোমরা সবাই ভালো আছো। আজ আমরা শিখবো এবং জানবো বিশেষণ পদ (Bisheshon pod) সম্পর্কে। বিশেষণ পদকে সহজতরভাবে শিখতে হলে আমাদের অবশ্যই বিশেষণ পদকে বেসিক সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই আমরা প্রত্যেক বিশেষণ পদকে উদাহরণসহ শ্রেণীবিভাগ করে তোমাদের সামনে উপস্থাপন করতে চলেছি বিশেষণ পদের ক্লাস। চলো তবে শুরু করি বিশেষণ পদের বেসিক থেকে সম্পূর্ণ আলোচনা।
বিশেষণ পদ
Bisheshon pod
bangla byakaron
Bengali Grammar
বিশেষণ পদ কী?
যে পদ বা শব্দ দ্বারা কোনও বিশেষ্য, বিশেষণ ক্রিয়াপদের
দোষ, গুণ, অবস্থা, পরিমাণ, ধর্ম, সংখ্যা ইত্যাদি বোঝায় তাকে বিশেষণ
পদ বলে।
$ads={1}
যেমন-
খুব, শান্ত, মেধাবী, দ্রুত, রানী, ছোট বল, বড়ো পুকুর, লাল জামাইত্যাদি।
রমা খুব শান্ত মেয়ে ।
রমেন মেধাবী ছেলে।
রীতা দ্রুত দৌড়ায়।
গোলাপকে ফুলের রানি বলে।
বাচ্চারা ছোটো বল ভালোবাসে।
আমাদের একটি বড়ো পুকুর আছে।
জ্যোতিকে লাল জামায় খুব সুন্দর দেখায়।
এখানে বিষয়টি আরেকটু ভালো ভালো করে দেখা যায়।
প্রথম বাক্যে শান্ত একটি মেয়ে। এখন যদি প্রশ্ন করো- সে কেমন মেয়ে ? উত্তর পাবে - শান্ত।
তাহলে শান্ত শব্দটি রমা নামক মেয়েটির স্বভাবের পরিচয় জ্ঞাপন করেছে।
এখন যদি ওই শান্ত কে প্রশ্ন করা যায় রমা কেমন শান্ত ? উত্তর – খুব।
আবার দেখো দ্বিতীয় বাক্যে রমেন মেধাবী ছেলে। এখন যদি প্রশ্ন করো
সে কেমন ছেলে? উত্তর পাবে -মেধাবী। তাহলে মেধাবী শব্দটি
রামেন নামক ছেলেটির গুণের পরিচয় জ্ঞাপন করেছে।
তেমনি রীতা দৌড়ায়-কেমন দৌড়ায় ? উত্তর- দ্রুত।
বিশেষণ পদের প্রকারভেদ
বিশেষণ পদ সাধারণত দুই
রকম যথা-
১) নাম বিশেষণ
২) ক্রিয়া বিশেষণ
নাম বিশেষণ কাকে বলে?
উদাহরণ দাও।
যে বিশেষণ পদ কোন বিশেষ্য বা সর্বনামের অর্থাৎ নাম পদের দোষ, গুণ, অবস্থা , পরিমাণ, উপাদান ইত্যাদি
প্রকাশ করে তাকে নাম বিশেষণ বলা হয়।
নাম বিশেষণের প্রকারভেদ
নাম বিশেষণ সাধারণত তিন
রকম যথা-
১) বিশেষ্যের
বিশেষণ
২) বিশেষণের বিশেষণ
৩) সর্বনামের বিশেষণ
বিশেষ্যের বিশেষণ কাকে বলে?
উদাহরণ দাও।
যে বিশেষণ পদ কোন বিশেষ্য পদের দোষ, গুণ, অবস্থা, পরিমাণ, সংখ্যা প্রভৃতিকে বোঝায় তাকে বিশেষ্যের
বিশেষণ বলে।
$ads={2}
যেমন-
জবাফুল সাধারণত লাল হয়।
এখানে লাল জবাফুল বিশেষ্যের গুন প্রকাশ করেছে।
গরম দুধ পান করা উচিত।
এখানে গরম দুধ বিশেষ্যের অবস্থা প্রকাশ করেছে।
গরমকালে ঠান্ডা জল পান করা ভালো।
এখানে ঠান্ডা জল বিশেষ্যের অবস্থা প্রকাশ করেছে।
সৌরভ বুদ্ধিমান ছেলে।
এখানে বুদ্ধিমান সৌরভ বিশেষ্যের গুন প্রকাশ করেছে।
এরূপ - নীল ফুল, হলুদ পাখি, শীতল বাতাস, সুন্দর মুখ কালোকয়লা, গরিব ইত্যাদি।
বিশেষ্যের বিশেষণের প্রকারভেদ-
বিশেষ্যের বিশেষণ সাধারণত পাঁচ প্রকার যথা-
১) সংখ্যাবাচক
বিশেষণ
২) পূরণবাচক বিশেষণ
৩) গুণবাচক বিশেষণ
৪) সংজ্ঞাবাচক
বিশেষণ
৫) পরিমাণ বাচক
বিশেষণ
সংখ্যাবাচক বিশেষণ কাকে বলে?
উদাহরণ দাও।
যে বিশেষণের দ্বারা বিশেষ্যের
সংখ্যা নির্দেশ করা হয় তাকে সংখ্যাবাচক বিশেষণ বলা হয়।
যেমন-
আমি পাঁচদিন পর মামার বাড়ি বেড়াতে যাব।
আমরা প্রতিদিন মাঠে দু'ঘণ্টা খেলা
করি।
এরূপ – আটদিন, দশ টাকা, পাঁচকেজি, দু-শো বার ইত্যাদি।
পূরণবাচক বিশেষণ কাকে বলে?
উদাহরণ দাও।
যে বিশেষণ পদের সাহায্যে বিশেষ্য
পদের পর্যায়ক্রমিক অবস্থান বোঝানো হয়,
তাকে পূরণবাচক
বিশেষণ বলা হয়।
যেমন - আমি দশম শ্রেণীতে পড়ি।
এরূপ- দ্বিতীয় পরীক্ষা, পঞ্চম
শ্রেণি, নববর্ষ ইত্যাদি।
গুণবাচক বিশেষণ কাকে বলে?
উদাহরণ দাও।
যে বিশেষণ পদের সাহায্যে বিশেষ্যের গুন নির্দেশ করে তাকে গুণবাচক বিশেষণ বলে।
যেমন –
রাহুল একজন পরিশ্রমী ব্যক্তি।
মক্কা শহর একটি পবিত্র স্থান।
এরূপ- পরিশ্রমী ছাত্র, ঘন বন, টাটকা খাবার ইত্যাদি।
সংজ্ঞাবাচক বিশেষণ কাকে বলে?
উদাহরণ দাও।
যে বিশেষণ পদের সাহায্যে বিশেষ্যের
পরে তদ্ধিত প্রত্যয় যোগ করে যে বিশেষণ পদ গঠন করা হয়, তাকে সংজ্ঞাবাচক
বিশেষণ বলে।
$ads={1}
যেমন - বাঙালি রান্না সবার প্রিয়।
এরূপ- কাশ্মীরি আপেল, ঢাকাই শাড়ি ইত্যাদি।
পরিমাণ বাচক বিশেষণ কাকে বলে?
উদাহরণ দাও।
যে বিশেষণের সাহায্যে বিশেষ্যের পরিমাণ নির্দেশ করা হয়, তাকে পরিমাণ বাচক বিশেষণ বলে।
যেমন - পটলবাবু দ্বিগুণ পরিশ্রম
করেন।
এরূপ- পাঁচ ভাগ, চার মন ধান, দশকেজি পটল ইত্যাদি।
বিশেষণের বিশেষণ কাকে বলে?
উদাহরণ দাও।
যে বিশেষ্য পদ বিশেষণের বিশেষত্ব বিশেষভাবে
প্রকাশিত হয় তাকে বিশেষণের বিশেষণ বলে।
যেমন-
শীতকালে অল্প গরম জলে স্নান করা উচিত।
সীতার গানের গলা খুব মধুর।
মহিম বেশ চালাক ছেলে।
এখানে – অল্প, খুব, বেশ------বিশেষণের
বিশেষণ পদ।
এরূপ- অতিশয়, টকটকে, ভারি ইত্যাদি।
সর্বনামের বিশেষণ কাকে বলে?
উদাহরণ দাও।
যে বিশেষ্য পদ কোন সর্বনাম পদের
গুণ, অবস্থা, প্রকৃতি ইত্যাদি নির্দেশ করে তাকে সর্বনামের
বিশেষণ বলে।
যেমন- স্মরণীয়, মৃত্যুঞ্জয় ইত্যাদি।
ক্রিয়া বিশেষণ কাকে বলে?
উদাহরণ দাও।
যে বিশেষণ পদে কোন
ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ, অবস্থা, পরিমান, স্থান ও সময় বোঝায়, তাকে ক্রিয়া বিশেষণ পদ বলে।
$ads={2}
যেমন-
ঘোড়া দ্রুত দৌড়ায়।
কাক ডাকে কা-কা।
সে বেশি কথা বলে।
এখানে- দ্রুত, কা-কা, বেশি,-------- ক্রিয়া বিশেষণ
পদ।
এরূপ – শীঘ্র, তাড়াতাড়ি, আস্তে আস্তে, ধীরে
ধীরে, গুনগুন, হেসে হেসে, জলদি, ইত্যাদি।
যদি বিশেষণ পদ সম্পর্কে তোমাদের কোনো অসুবিধা থাকে, তাহলে তোমরা নিচে Comment Box এ গিয়ে Comment করতে পারো। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব তোমাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার।
আমাদের Article ভালো লাগলে লাইক, শেয়ার ও Subscribe করতে পারো। যাতে তোমাদের অনুপ্রেরনাকে পাথেয় করে আরো নিত্যনতুন বিষয়ের উপর সহজতর, বোধগম্য ও চিত্তাকর্ষক লেখনী নিয়ে হাজির হতে পারি। ততক্ষন তোমরা সুস্থ থাকো, ভালো থেকো এবং এভাবেই পড়তে থাকো।
ধন্যবাদ