![]() |
সবার আমি ছাত্র সুনির্মল বসু |
সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দরা আশা করি তোমরা ভালোই আছো। আজকে আমাদের বিশেষ নিবেদন চতুর্থ শ্রেণীর কবিতা সুনির্মল বসুর লেখা সবার আমি ছাত্র । তবে চলো বন্ধুরা আমরা পাঠে মনোনিবেশ করি...
চতুর্থ শ্রেণী কবিতা সবার আমি ছাত্র সুনির্মল বসু
সবার আমি ছাত্রসুনির্মল বসু
আকাশ আমায় শিক্ষা দিল
উদার হতে ভাইরে,
কর্মী হবার মন্ত্র আমি
বায়ুর কাছে পাইরে।
পাহাড় শিখায় তাহার সমান
হই যেন ভাই মৌন মহান,
খোলা মাঠের উপদেশে
দিলখোলা হই তাইরে।
সূর্য আমায় মন্ত্রণা দেয়
আপন তেজে জ্বলতে,
চাঁদ শিখাল হাসতে মিঠে,
মধুর কথা বলতে।
ইঙ্গিতে তার শিখায় সাগর,
অন্তর হোক রত্নআকর ;
নদীর কাছে শিক্ষা পেলাম
আপন বেগে চলতে।
মাটির কাছে সহিষ্ণুতা
পেলাম আমি শিক্ষা,
আপন কাজে কঠোর হতে
পাষাণ দিল দীক্ষা।
ঝরনা তাহার সহজ গানে
গান জাগাল আমার প্রাণে,
শ্যামবনানী সরসতা
আমায় দিল ভিক্ষা।
বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর,
সবার আমি ছাত্র,
নানান ভাবের নতুন জিনিস
শিখছি দিবারাত্র।
এই পৃথিবীর বিরাট খাতায়
পাঠ্য যে সব পাতায় পাতায়
শিখছি সে সব কৌতূহলে
সন্দেহ নাই মাত্র।
সবার আমি ছাত্র কবিতার শব্দার্থঃ
শব্দার্থ : কর্মী- কাজে দক্ষ। মৌন -নীরব। দিলখোলা - উদারমনা। মন্ত্রণা -পরামর্শ। ইঙ্গিত -ইশারা। রত্নআকর -রত্নের খনি, সমুদ্র। সহিষ্ণুতা -ধৈর্য, সহ্যক্ষমতা। পাষাণ — পাথর। দীক্ষা — মন্ত্রগ্রহণ। শ্যামবনানী – সবুজ অরণ্য। পাঠ্য – পাঠের উপযোগী।
সবার আমি ছাত্র কবিতার কবি পরিচিতিঃ
সুনির্মল বসু (১৯০২-১৯৫৭) : বিহারের গিরিডিতে জন্মগ্রহণ করেন। প্রধানত ছোটোদের জন্য তিনি ছড়া, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক ইত্যাদি লিখেছেন। ছবি আঁকাতেও তিনি ছিলেন সমান দক্ষ। তাঁর লেখা বইগুলি হলো ছানাবড়া, ছন্দের টুংটাং, বীর শিকারি, বেড়ে মজা, হইচই, কথাশেখা ইত্যাদি। তিনি ১৯৫৬ সালে -- ‘ভুবনেশ্বরী পদক' পেয়েছিলেন।
Sobar Ami Chatro Question & Answer
১. সুনির্মল বসুর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো ।
উত্তরঃ সুনির্মল বসুর লেখা দুটি বইয়ের নাম - ছানাবড়া, কথাশেখা।
২. তিনি ১৯৫৬ সালে কী পদক পেয়েছিলেন?
উত্তরঃ তিনি ১৯৫৬ সালে ‘ভুবনেশ্বরী পদক' পেয়েছিলেন।
সবার আমি ছাত্র প্রশ্ন- উত্তর
নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
৩.১ কার উপদেশে কবি দিলখোলা হন?
উত্তরঃ খোলা মাঠের উপদেশে কবি দিলখোলা হন।
৩.২ পাষাণ কবিকে কী শিক্ষা দিয়েছিল?
উত্তরঃ পাষাণ কবিকে আপন কাজে কঠোর হতে শিক্ষা দিয়েছিল।
৩.৩ কবি কার কাছ থেকে কী ভিক্ষা পেলেন?
উত্তরঃ কবি শ্যামবনানীর কাছ থেকে সরসতা ভিক্ষা পেলেন।
৩.8 কে কবিকে মধুর কথা বলতে শেখাল ?
উত্তরঃ চাঁদ কবিকে মধুর কথা বলতে শেখাল।
৩.৫ নদীর কাছ থেকে কী শিক্ষা পাওয়া যায় ?
উত্তরঃ নদীর কাছ থেকে আপন বেগে চলার শিক্ষা পাওয়া যায়।
৪. সন্ধি করে লেখো :
রত্ন + আকর = রত্নাকর।
মেঘ + আলোক = মেঘালোক।
কমলা + আসনা = কমলাসনা।
৫. সমার্থক শব্দ লেখো :
চাঁদ = শশী, বিধু, চন্দ্র।
সূর্য = রবি, তপন, দিবাকর।
পাহাড় = গিরি, পর্বত, শৈল।
বায়ু = পবন, হওয়া, সমীরণ।
নদী = তটিনী, স্রোতস্বিনী, প্রবাহিণী।
পৃথিবী = বসুন্ধরা, জগত, ভুবন।
সাগর = সিন্ধু, সমুদ্র, পারাবার।
৬. বাক্যরচনা করো :
উদার = বিদ্যাসাগর উদার মানুষ ছিলেন।
মহান = নেতজি মহান বীর ছিলেন।
মন্ত্রণা = কু- মন্ত্রনা আমাদের ক্ষতি করে।
শিক্ষা = শিক্ষকরা শিক্ষা দেন।
সহিষ্ণুতা = সহিষ্ণুতা মানুষকে সফল করে।
সন্দেহ = বিনা কারণে সন্দেহ করা উচিত না।
কৌতূহল = ছোটদের কৌতূহল বেশি।
ঝরনা = পাহাড়ি অঞ্চলে ঝরনা দেখা যায়।
৭. নীচের বিশেষণ শব্দগুলির বিশেষ্য রূপ লেখো :
কর্মী = কর্ম।
মৌন = মৌনতা।
মধুর = মধু / মাধুর্য।
কঠোর = কঠোরতা।
বিরাট = বিরাটত্ব / বিশালতা।
৮. নীচের বিশেষ্য শব্দগুলির বিশেষণ রূপ লেখো :
শিক্ষা = শিক্ষিত।
মন্ত্র = মন্ত্রী।
বায়ু = বায়বীয়।
মাঠ = মেঠো।
তেজ = তেজস্বী।
৯. কবিতা থেকে সর্বনাম শব্দগুলি খুঁজে নিয়ে লেখো: (অন্তত ৫ টি)
উত্তরঃ আমি, তাহার, আমার, আমায়, তার।
Class 4 Sobar Ami Chatro By Sunirmal Basu
১০. গদ্যরূপ লেখো :
১০.১ ‘কর্মী হবার মন্ত্র আমি বায়ুর কাছে পাইরে।’
উত্তরঃ আমি বায়ুর কাছে কর্মী হবার মন্ত্র পাই।
১০.২ ‘সূর্য আমায় মন্ত্রণা দেয় আপন তেজে জ্বলতে।'
উত্তরঃ সূর্য আমাকে আপন তেজে জ্বলার মন্ত্রনা দেয়।
১০.৩ ইঙ্গিতে তার শিখায় সাগর, অন্তর হোক রত্নআকর ;'
উত্তরঃ সাগর ইঙ্গিতে শেখায় অন্তরকে রত্নাকর হতে।
১০.৪ "শ্যামবনানী সরসতা আমায় দিল ভিক্ষা। '
উত্তরঃ শ্যামবনানী আমায় সরসতা ভিক্ষা দিল।
১০.৫ ‘শিখছি সে সব কৌতূহলে সন্দেহ নাই মাত্র।”
উত্তরঃ সন্দেহ নেই সেসব কৌতূহলে শিখেছি মাত্র।
১১. ‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা' বলতে কবিতায় কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তরঃ ‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা' বলতে কবি গোটা বিশ্ব অর্থাৎ পৃথিবীকে বুঝিয়েছেন। শুধুমাত্র পাঠশালা বা বিদ্যালয়ে নয় গোটা পৃথিবীই থেকে শিক্ষা নেওয়া যায়। বিশাল পৃথিবীর আকাশ, বাতাস, নদী, চন্দ্র, সূর্য, মাটির থেকে এমনকি অনেক জিনিস থেকে শিক্ষা লাভ করা যায়।
১২. প্রকৃতির কার কাছ থেকে আমরা কীরূপ শিক্ষা পেতে পারি লেখো :
উত্তরঃ
১ আকাশ- এর কাছ থেকে উদার হবার শিক্ষা পাই।
২ বাতাস- এর কাছ থেকে কর্মী হবার মন্ত্রনা পাই।
৩ পাহাড়- মৌন-মহান হবার শিক্ষা দেয়।
৪ খোলামাঠ- হৃদয়কে দিলখোলা অর্থাৎ মুক্তমনা হবার প্রেরনা দেয়।
৫ সূর্য- আপন তেজে জ্বলার শিক্ষা দেয়।
৬ চাঁদ- চাঁদের কাছ থেকে মিষ্টি কথা বলার শিক্ষা পাই।
১৩. প্রকৃতির আরও কিছু উপাদানের কথা তুমি লেখো আর তাদের থেকে কী শিক্ষা তুমি নিতে পারো তা উল্লেখ করো।
উত্তরঃ
ফুলের কাছ থেকে সৌরভের মতো মানুষকে উপকার কর উচিত।
ঘাসের কাছ থেকে নিরহংকারী হবার অর্থাৎ মাটির কাছে থাকার শিক্ষা পায়।
গাছের কাছ থেকে উপকারী, বিনয়ী হবার শিক্ষা লাভ করি।
১৪. এমন একজন মানুষের কথা লেখো যার কাছ থেকে অহরহ তুমি অনেক কিছু শেখো ঃ
উত্তরঃ মা-ই হল শিশুর প্রথম শিক্ষিকা। একজন মা যত শিক্ষিত হবে জাতিও তত শিক্ষিত হবে। আমরা প্রথমেই মায়ের থেকে মাতৃভাষা শিখি। সহিষ্ণুতার শিক্ষাও আমরা মায়ের থেকে শিখি। বিনয়ী, পরিশ্রমী, কঠোর ইত্যাদি শিখি। মায়েরা যেমন দায়িত্বশীল, তিনিও আমাদের দায়িত্ববান হবার শিক্ষা দেন। এমনকি রান্না-বান্না, কাপড়-কাচা, নিজের কাজ নিজে করা আমরা মায়ের থেকে শিখি।
আগামী পোষ্টে আরও নিত্যনতুন বিষয় নিয়ে আমরা হাজির হবো। ততক্ষণে ভালো থেকো, সুস্থ থেকো। তোমাদের কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট করতে পারো। সাধ্যমতো আমরা তোমাদের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।