![]() |
ঘুম ভাঙানি মোহিতলাল মজুমদার |
ঘুম ভাঙানি কবিতার প্রশ্ন উত্তর
চতুর্থ শ্রেণী বাংলা ঘুম ভাঙানি মোহিতলাল মজুমদার
Ghum Vangani Mohitlal Mojumdar
ঘুম -ভাঙানি
মোহিতলাল মজুমদার
ফুটফুটে জোছনায়
বনে কারা গান গায়,
জেগে শুনি বিছনায় উঠে পড়ো লক্ষ্মীটি
ঝিমিঝিমি ঝুম ঝুম—
‘চাও কেন পিটি-পিটি ?
চাঁদ চায় মিটিমিটি
বনভূমি নিঝঝুম!
ফাল্গুনে বনে বনে
পরিরা যে ফুল বোনে,
চলে এসো ভাই-বোনে,
চোখ কেন ঘুম-ঘুম ?
জানালায় মুখ দিয়ে
দেখি, সাদা জোছনায়,
পাতাগুলো হলো কী এ!
রুপোলিতে রোজ নায়!
"ওগো শোনো কান পেতে,
মোরা আছি গানে মেতে,
ছোটো ছোটো লণ্ঠন
গায়ে গায়ে ঠনঠন,
ঝকমকে পল্টন—
আমোদের রোশনাই ।
ঘোর ঘোর এই আলো
আবছায়া বাসি ভালো,
ঘুরে উড়ে গান গাই
খুশদিল, হুঁশ নাই !”
চুপি চুপি ভয়ে ভয়ে
জোছনায় আবছায়,
যেই গেনু হেঁট হয়ে
জুতো মোজা দিয়ে পায়
নিবে গেল রোশনাই,
পরিদের খোঁজ নাই,
কই গান? কই সুর?
শোনা যায় ফুরফুর
বাতাসের ঝুরঝুর
বাইরেটা ফ্যাকাশে!
ডানায় শিশির মাখি
এতখন শ্যামা পাখি
ঘুম ভাঙানি কবিতার কবি পরিচিতিঃ
মোহিতলাল মজুমদার (১৮৮৮-১৯৫২) : রবীন্দ্রনাথের সমসময়ে যাঁরা এক স্বতন্ত্র ধারার খোঁজে নতুন ধরনের
কবিতা লিখেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কবি মোহিতলাল মজুমদার। তাঁর আদিবাড়ি হুগলি জেলার
বলাগড় গ্রামে। পিতার নাম নন্দলাল মজুমদার। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হলো স্বপনপসারী, বিস্মরণী, স্মরগরল, হেমন্ত গোধুলি, ছন্দ চতুদর্শী এবং প্রবন্ধগুলি হলো আধুনিক বাংলা সাহিত্য, জীবন জিজ্ঞাসা, সাহিত্য
বিচার ইত্যাদি। কবি মোহিতলাল শেষ জীবনে কিছুদিন বঙ্গদর্শন (নবপর্যায়) ও বঙ্গভারতী নামক সাময়িকপত্র সম্পাদনা করেছিলেন।
ঘুম ভাঙানি কবিতার শব্দার্থঃ
শব্দার্থ : নায় স্নান করে। লণ্ঠন কাচ দিয়ে ঘেরা বাতিবিশেষ। পল্টন সৈন্যদল। আমোদের রোশনাই— আনন্দের আলো। খুশদিল – আনন্দিত হৃদয় বা মন। হুঁশ – জ্ঞান, চেতনা।
Ghum Vangani Question Answer
হাতে কলমে
১. মোহিতলাল মজুমদারের লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তরঃ মোহিতলাল মজুমদারের লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম- স্বপনপসারী, বিস্মরণী, স্মরগরল, হেমন্ত গোধুলি।
২. তাঁর সম্পাদিত দুটি পত্রিকার নাম লেখো।
উত্তরঃ তিনি বঙ্গদর্শন ও বঙ্গভারতী নামক সাময়িকপত্র সম্পাদনা করেছিলেন।
৩. পূর্ণিমায় ফুটফুটে জোছনা যেমন, তেমনই ঘুটঘুটে অন্ধকার, অমাবস্যায়।
৪. ‘পিটিপিটি' ও ‘মিটিমিটি' তাকানোর অর্থ হলো বারবার চোখ খোলা ও বোজা।
৫. 'লক্ষ্মীটি' শব্দটি কবিতায় যে অর্থে ব্যবহার হয়েছে ভালো ছেলে।
৬. কবিতায় কিছু শব্দ উচ্চারণে তার মূল চেহারা থেকে বদলে গেছে। বদলে যাওয়া চেহারার পাশাপাশি মূল শব্দগুলি লেখো :
জোছনা = জ্যোৎস্না।
আবছায় = আবছা।
বিছনা = বিছানা।
নিবে = নিভে।
নিঝঝুম = নিঝুম।
শ্যামা-পাখি = শ্যামা পাখি।
৭. কবিতা থেকে ধ্বনাত্মক শব্দগুলি খুঁজে নিয়ে তা দিয়ে স্বাধীন বাক্য রচনা করো :
৮. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :
৮.১ কবিতায় কোন ঋতুর কথা রয়েছে?
৮.২ গান গেয়ে কারা ডাকে?
৮.৩ জানালায় মুখ বাড়িয়ে বাইরে কী দেখা গেল ?
৮.৪ পাতাগুলোকে রুপোলি লাগছে কেন?
৮.৫ ‘ওগো শোনো কান পেতে – কান পাতলে কী শোনা যাবে?
৮.৬ ‘চুপি চুপি ভয়ে ভয়ে' কবিতার কথক কোন কাজ করতে চায় ?
৮.৭ তার উদ্দেশ্য সফল হলো কি?
৯. ‘ভিজে জবজবে-র মতো আর কোন কোন শব্দ পাশাপাশি পাতায় লিখতে পারো তা কবিতাটি থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো।
১০. নীচের পক্তিগুলিতে 'বনে', বোনে "বোনে’শব্দ তিনটি উচ্চারণে এক হলেও অর্থে আলাদা। এই তিনটি শব্দের অর্থ লেখো এবং তা দিয়ে বাক্য রচনা করো :
ফাল্গুনে বনে বনে
পরীরা যে ফুল বোনে চলে এসো ভাই বোনে
১১. গায়, চায়, বাসি, নায়, ঘোর, সুর – এই শব্দগুলিকে দুটি অর্থে ব্যবহার করে আলাদা আলাদা বাক্য লেখো। ১২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১২.১ কবিতায় কথক রাত জেগে বাইরে কী দেখে?
১২.২ কবিতায় বর্ণিত বনভূমি নিঝঝুম কেন?
১২.৩ ‘মোরা আছি গানে মেতে' – এখানে 'মোরা' বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? তারা গান গেয়ে কী বলেছিল?
১২.৫ কথক চুপি চুপি জুতোমোজা পায়ে দিয়ে বাইরে যেতে কী ঘটনা ঘটল তা নিজের ভাষায় লেখো।
১২.৬ এমনই কোনো এক জ্যোৎস্না রাতে জানালা দিয়ে চাঁদের আলো এসে তোমার বিছানায় পড়ছে। তোমার ঘুম আসছে না। এই জ্যোৎস্না রাতে তোমার নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তুমি কয়েকটি বাক্য লেখো।