ক্লাস ১২ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতার বড়ো প্রশ্ন উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণী বাংলা ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | Krondonrota Jononir Pashe Descriptive Question Answer

ক্রন্দনরতা জননীর পাশে
ক্রন্দনরতা জননীর পাশে
সুপ্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা। আশা করি প্রত্যেকেই ভালো আছো এবং সুস্থ আছো। আমাদের Digital Porasona-র Educational Platform-এ তোমাদের সকলকে জানাই সাদর সম্ভাষণ। আমদের Website এর পক্ষ থকে আজকের বিশেষ নিবেদন দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা "ক্রন্দনরতা জননীর পাশে" কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নের আলোচনা।  তো শুরু করি বন্ধুরা... 

Class 12 Bengali Kobita Krondonrota Jononir Pashe Descriptive Question Answer

দ্বাদশ শ্রেণী বাংলা ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

ক্লাস ১২ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতার বড়ো প্রশ্ন উত্তর




১) “নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে/না-ই যদি হয় ক্রোধ...” —কবি কাকে 'ভাই' বলে সম্বোধন করেছেন? কবির প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করো। (১+৪ = ৫) 


উত্তর >> মানবিক এবং সামাজিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তাঁর 'ক্রন্দনরতা জননীর পাশে' কবিতায় ‘ভাই” বলতে কৃষিজমি রক্ষার গণআন্দোলনে শহিদ মানুষদের কথা বুঝিয়েছেন ৷

>> নিহত ভাইয়ের শবদেহ' কবির মনে জন্ম দিয়েছে তীব্র ক্রোধের। এই হত্যা আর মানবিক লাঞ্ছনায় ব্যথিত হয়ে তিনি নিজের দেশমাতাকে কাঁদতে দেখেছেন। তাঁর মনে হয়েছে এই দুঃসময়ে ক্রন্দনরতা জননীর পাশে সর্বশক্তি দিয়ে দাঁড়ানো উচিত। এখন লেখা, গান বা আঁকাআঁকি সবকিছুরই বিষয় হওয়া উচিত এর প্রতিবাদ। মনের মধ্যে যদি ভালোবাসা থাকে, সামাজিক চেতনা থাকে, মূল্যবোধের অস্তিত্ব থাকে তাহলে ক্রোধ আর প্রতিবাদই হওয়া উচিত একমাত্র অস্ত্র। এভাবেই মৃদুল দাশগুপ্ত তৈরি করে নেন তাঁর নিজস্ব কবিধর্ম, যেখানে কবিতাই হয়ে ওঠে জাগ্রত বিবেকের আত্মপ্রকাশ। সমাজের প্রতিটি ঘটনাপ্রবাহের তরঙ্গকে উপলব্ধি করে নিবিড়ভাবে তার সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন কবি, সেগুলিকে বিশ্লেষণ করে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বাস্তব থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা নয়, এমনকি বাস্তবকে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করাও নয়, পরিবর্তে সংকটের মধ্যে দাঁড়িয়ে তার মোকাবিলা করা—মৃদুল দাশগুপ্তের প্রতিক্রিয়ার এই ধরনই স্পষ্ট হয় ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে' কবিতায় ৷

২) “আমি তা পারি না।”—কে পারেন না? না পারার বেদনা কীভাবে কবিকে আলোড়িত করেছে তা কবিতা অবলম্বনে লেখো। [নমুনা প্রশ্ন] ১+৪ = ৫ 


উত্তর >> ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে' কবিতার কবি মৃদুল দাশগুপ্ত স্বয়ং তাঁর না পারার কথা বলেছেন।

» সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় শোষণ-বঞ্চনার প্রতিবিধান চেয়ে ঈশ্বরের কাছে আবেদন করা অর্থাৎ হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা কবির পক্ষে সম্ভব নয়। বেদনা আর বিক্ষোভ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় কবির মনে। নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন শরীর জঙ্গলে পেয়ে তাঁর মধ্যে বিক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে এবং এটাই যথার্থ কবিধর্ম বা মানবধর্ম বলে কবি মনে করেন। দেশবাসীর এই বিপন্ন অবস্থায় ক্রন্দনরতা দেশজননীর পাশে থাকা, নিহত দেশবাসী ভাইয়ের মৃতদেহ দেখে ক্রোধের জন্ম হওয়া—এসবই একজন কবির কাছে প্রত্যাশিত। অন্যথায় লেখা, গান গাওয়া কিংবা ছবি আঁকা অর্থাৎ শিল্পীর নান্দনিক প্রয়াসগুলি অর্থহীন হয়ে যায়। শাসকের শোষণে জীবনের অপচয় দেখে প্রতিবাদ না করলে মানুষের ভালোবাসা, দায়বদ্ধতা কিংবা মূল্যবোধ অর্থহীন হয়ে যায়। ঈশ্বরের উপরে নির্ভর করে বাস্তব থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা কবির কাছে অমানবিক লাগে। চারপাশের নারকীয় অত্যাচার, সন্ত্রাসের রাজত্ব কবির মনে যে বেদনার জন্ম দেয় তা ক্রোধের আগুনে রূপান্তরিত হয়—“...কবিতায় জাগে/আমার বিবেক, আমার বারুদ / বিস্ফোরণের আগে।” এভাবেই কবিতাটিতে এক আলোড়িত কবিসত্তার বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, প্রত্যাঘাতের স্বপ্নের প্রকাশ লক্ষ করা যায়।

Newton Hossain

Newton Hossain, the founder of this blog, is a Lecturer of the English Language and also loves to explain Life science and Geography.

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post