![]() |
রাসায়নিক বন্ধন |
প্রিয়
শিক্ষার্থী বন্ধুরা, ডিজিট্যাল পড়াশোনা'র অনলাইন প্লাটফর্মে
তোমাদের সবাইকে স্বাগত। আজকে আমি পোষ্টে পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের
ভৌত বিজ্ঞানের রাসায়নিক বন্ধন অধ্যায় সম্পর্কে বিস্তারে আলোচনা করব এবং তার সঙ্গে সঙ্গে রাসায়নিক বন্ধন
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর নিয়েও আলোচনা করব। আশা করি এই
পোষ্টটি পড়ে তোমরা খুবই
উপকৃত হবে। পোষ্টটি প্রথম
থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার
আবেদন রইল।
{tocify} $title={Table of Contents}
$ads={1}
তড়িৎযোজ্যতা বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ ইলেকট্রন স্থানান্তরের মাধ্যমে
যে যোজ্যতার প্রকাশ ঘটে, তাকে তড়িৎযোজ্যতা বলা হয়।
যোজক ইলেকট্রন কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ কক্ষে
উপস্থিত এক বা একাধিক ইলেকট্রন, যারা রাসায়নিক বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে, তাদের যোজক
ইলেকট্রন বলে।
তড়িৎযোজী যৌগের জলীয় দ্রবণে তড়িৎশক্তি চালনা করা হলে কী হবে?
উত্তরঃ তড়িৎশক্তির উপস্থিতিতে আয়নীয় যৌগের
তড়িৎ বিশ্লেষণ ঘটবে এবং এর ফলে ক্যাথোড ও অ্যানোডে নতুন পদার্থ উৎপন্ন হবে।
ল্যাটিস শক্তি কী?
উত্তরঃ গ্যাসীয় ক্যাটায়ন এবং অ্যানায়ন
থেকে ১ গ্রাম সংকেত ভর পরিমাণ আয়নীয় কেলাস উৎপন্ন হলে যে পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়, তাকে
ল্যাটিস শক্তি বলে।
কোন প্রকার যৌগে একক অণুর অস্তিত্ব নেই?
উত্তরঃ আয়নীয় যৌগে।
Na+ আয়ন ও Ne পরমাণুর মধ্যে মিল কোথায়?
উত্তরঃ Na+ আয়ন ও Ne পরমাণু
উভয়েরই ইলেকট্রন সংখ্যা ১০ হওয়ায়, এদের আইসো ইলেকট্রনিক (Iso-Electronic) বলা হয়।
MgCl2-এর সংকেত ওজন কত?
উত্তরঃ MgCl2-এর সংকেত ওজন
হল (24+2×35.5)=95
এমন একটি আয়নীয় যৌগের নাম উল্লেখ করো যার ক্ষেত্রে অষ্টক সূত্র (Octave Rule) প্রযোজ্য নয়।
উত্তরঃ LiH
হাইড্রাইড আয়ন (H-) এর ইলেকট্রন বিন্যাসের সঙ্গে কোন নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাসের মিল পাওয়া যায়?
উত্তরঃ হিলিয়াম (He)।
কঠিন অবস্থায় আয়নীয় যৌগগুলি তড়িৎ পরিবহণ করে না কেন?
উত্তরঃ কঠিন অবস্থায় আয়নীয় যৌগগুলিতে উপস্থিত
ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের মধ্যে পারস্পরিক আকর্ষণ বল কাজ করায় সেগুলির আপেক্ষিক সরণ সম্ভব
হয় না তাই কঠিন অবস্থায় আয়নীয় যৌগগুলি তড়িৎ পরিবহণ করে না।
দুটি পরমাণুর মধ্যে তড়িৎ ঋণাত্বকতার পার্থক্য খুব কম হলে, তাদের মধ্যে সৃষ্ট বন্ধনটির প্রকৃতি কীরুপ হবে?
উত্তরঃ দুটি পরমাণুর মধ্যে তড়িৎ ঋণাত্বকতার
পার্থক্য খুব কম হলে বন্ধনটি হবে সমযোজী বন্ধন।
জলীয় অবস্থায় তড়িৎ পরিবহণে সক্ষম একটি সমযোজী যৌগের নাম লেখো।
উত্তরঃ গ্যাসীয় HCl
$ads={2}
সমযোজী বন্ধন কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ সমযোজী বন্ধন তিন প্রকার, যথা-
একবন্ধন, দ্বিবন্ধন, ত্রিবন্ধন।
একটি অধ্রুবীয় (non-Polar) দ্রাবকের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ বেজ্ঞিন।
সমযোজী তড়িৎযোজী যৌগের মধ্যে কোনগুলি সাধারণত তড়িৎ অবিশ্লেষ্য?
উত্তরঃ সমযোজী যৌগগুলি।
নাইট্রোজেন অণুতে নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড়ার সংখ্যা কয়টি?
উত্তরঃ ২টি জোড়।
লুইস ডট চিত্র বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ সমযোজী বন্ধনের উপস্থিত বোঝানোর
জন্য ইলেকট্রনকে বিন্দু দ্বারা চিহ্নিত করে দুটি পরমাণুর মাঝে একজোড়া বা একের অধিক
জোড়া বিন্দুকে ব্যবহার করে সমযোজী যৌগের গঠন প্রকাশ করার পদ্ধতিকে লুইস ডট চিত্র বলা
হয়।
জল ও বেঞ্জিনের মধ্যে কোনটিতে NaCl দ্রবীভূত হবে?
উত্তরঃ NaCl আয়নীয় প্রকৃতির হওয়ার কারণে এটির
জলে দ্রাব্যতা বেশি।
এমন একটি সমযোজী পদার্থের নাম উল্লেখ করো যার কাঠিন্য তড়িৎযোজী পদার্থের থেকেও বেশি।
উত্তরঃ হীরক।
কারবোরানডাম কী?
উত্তরঃ সিলিকন কার্বাইড (SiC) কে কারবোরানডাম
বলা হয়।
ভারী জল (D2O) সমযোজী না তড়িৎযোজী?
উত্তরঃ ভারী জল (D2O) সমযোজী।
তড়িৎযোজ্যতার পরিমাপ কীভাবে করা হয়?
উত্তরঃ তড়িৎযোজী যৌগ গঠনের সময় কোনো মৌলের
ইলেকট্রন গ্রহণ বা বর্জন সংখ্যা দ্বারা এই মৌলের তড়িৎযোজ্যতার মান নির্ণয় করা হয়।
একটি তড়িৎ ধনাত্মক মৌলের নাম উল্লেখ করো যা তড়িৎযোজী এবং সমযোজী উভয় প্রকার যৌগ গঠনে অংশগ্রহণ করে।
উত্তরঃ হাইড্রোজেন।
সমযোজী যৌগের অণুগুলির মধ্যে কোন ধরনের আকর্ষণ বল ক্রিয়া করে?
উত্তরঃ দুর্বল প্রকৃতির ভ্যান্ডারওয়ালস আকর্ষণ
বল।
বিদ্যুতের সুপরিবাহী একটি সমযোজী কঠিন পদার্থের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ গ্রাফাইট।
সমযোজী একবন্ধন বিশিষ্ট একটি যৌগের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ মিথেন (CH4)।
এমন একটি সমযোজী যৌগের উদাহরণ দাও যাতে সমযোজী দ্বি-বন্ধন আছে।
উত্তরঃ ইথিলিন (C2H4)।
এমন একটি যৌগের উদাহরণ দাও যাতে সমযোজী ত্রি-বন্ধন আছে।
উত্তরঃ অ্যাসিটিলিন (C2H2)।
$ads={1}
রাসায়নিক বন্ধন কাকে বলে?
উত্তরঃ নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো ইলেকট্রন
বিন্যাস লাভের জন্য এক বা একাধিক পরমাণু একে অপরের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ
করে। এর ফলে তাদের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধনের সৃষ্টি হয়। রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট
এই পারস্পরিক বন্ধনকেই রাসায়নিক বন্ধন বলে।
আয়নীয় বা তড়িৎযোজী বন্ধন কাকে বলে?
উত্তরঃ নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো ইলেকট্রন
বিন্যাস লাভের উদ্দেশ্যে দুটি প্রশম পরমাণু নিজেদের মধ্যে ইলেকট্রন আদান-প্রদানের মাধ্যমে
আয়নে পরিণত হয় এবং নিজেরা কুলম্বীয় আকর্ষণের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে যে বন্ধন তৈরি করে,
তাকে আয়নীয় বা তড়িৎযোজী বন্ধন বলে।
আয়নীয় যৌগের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তরঃ আয়নীয় যোগের বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ-
ভৌত অবস্থাঃ বিপরীত তড়িৎদাহিত আয়নগুলি ত্রিমাত্রিক
সজ্জা গঠন করে বিশেষ জ্যামিতিক আকারসম্পন্ন কঠিন কেলাস তৈরি করে।
দ্রাব্যতাঃ আয়নীয় যৌগগুলি সাধারণত ধ্রুবীয় দ্রাবক
(Polar solvent)-এ বেশি পরিমাণে দ্রবীভূত হয়।
তড়িৎ পরিবাহিতাঃ আয়নীয় যৌগগুলি জলীয় দ্রবণে আয়নে
বিশ্লিষ্ট হয় এবং তড়িৎ শক্তি পরিবহণে সাহায্য করে।
গলনাঙ্ক
ও স্ফুটনাঙ্কঃ আয়নীয়
যৌগগুলির গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক সাধারণত সমযোজী যৌগগুলির তুলনায় বেশি হয়।
আয়নীয় যৌগগুলির গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বেশি হয় কেন?
উত্তরঃ আয়নীয় যৌগগুলিতে বিপরীত তড়িৎ আধান
যুক্ত পরমাণুগুলির মধ্যে তীব্র কুলম্বীয় আকর্ষণ বল ক্রিয়া করে। এর ফলে আয়নীয় যৌগের
কেলাস ঘনসংঘবদ্ধ হয়। তাই আয়নীয় যৌগের কেলাস থেকে আয়নগুলিকে মুক্ত করার জন্য প্রচুর
পরিমাণ শক্তির (তাপশক্তি) প্রয়োজন হয়। তাই আয়নীয় যৌগগুলির গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক
বেশি হয়।
কঠিন অবস্থায় আয়নীয় যৌগ তড়িৎ পরিবহণ করে না, কিন্তু গলিত বা জলে দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহণ করে কেন?
উত্তরঃ কঠিন অবস্থায় আয়নীয় যৌগগুলির মধ্যে
উপস্থিত ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের মধ্যে তীব্র তড়িৎ আকর্ষণ বল ক্রিয়া করের জন্য আয়নীয়
যৌগগুলি তড়িৎ পরিবহণ কঠিন অবস্থায় থাকাকালীন করে না কিন্তু গলিত বা জলে নবীভূত অবস্থায়
আয়নীয় যৌগস্থিত কেলাস শিথিল হয়, ফলে কাটায়ন ও অ্যানায়নগুলি সহজে মুক্ত হয়ে তড়িৎ
পরিবহনে অংশগ্রহণ করে, তাই আয়নীয় যৌগগুলি গলিত বা জলে দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহণ
করে।
তড়িৎযোজী যৌগের ক্ষেত্রে আণবিক ভর ব্যবহার না করে সংকেত ভর ব্যবহার করা উচিত কেন?
উত্তরঃ যে সংকেতের সাহায্যে আয়নীয় যৌগকে প্রকাশ
করা হয়, সেই সংকেতে উপস্থিত পরমাণুগুলির পারমাণবিক ভরের সমষ্টিকে ওই যৌগের সংকেত ভর
বলা হয়।
তড়িৎযোজী যোগের
ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন অণুর অস্তিত্ব না থাকার কারণে আণবিক ভরের পরিবর্তে সংকেত ভর শব্দটি
ব্যবহার করা হয়।
অষ্টক সূত্র কী?
উত্তরঃ বিভিন্ন মৌল রাসায়নিকভাবে সুস্থিতি
লাভের উদ্দেশ্যে নিজেদের যোগ্যতা কক্ষ থেকে ইলেকট্রন গ্রহণ, বর্জন বা জোড় গঠনের মাধ্যমে
নিকটতম নিষ্ক্রিয় মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করতে চায়। একেই অষ্টক সূত্র বলে।
অষ্টক সুত্রের সীমান্ধতাগুলি লেখো।
উত্তরঃ অষ্টম সুরের সীমাবদ্ধতাগুলি হল-
(ক) নোবেল গ্যাসগুলির
(নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলির) রাসায়নিক নিষ্ক্রিয়তার উপর ভিত্তি করে এই সুত্রটি তৈরি করা
হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, কিছু কিছু নিষ্ক্রিয় গ্যাস অক্সিজেন বা ফুরিনের
সঙ্গে যুক্ত হয়ে যৌগ গঠন করে।
(খ) কিছু কিছু
অণুর কেন্দ্রীয় পরমাণুর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে সর্ববহিঃস্থ কক্ষে ৮টির কম বা বেশি
ইলেকট্রন আছে, তার সত্ত্বেও অণুগুলির যথেষ্ট স্থায়ী।
(গ) বিভিন্ন
অণুর তুলনামূলক স্থিতিশীলতা এই সূত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা যায় না।
Na পরমাণু ও Na+ আয়নের মধ্যে কোনটি বেশি সুস্থিত এবং কেন?
উত্তরঃ অষ্টক সূত্রকে অনুসরণ করা হলে দেখা যায়,
যেসব পরমাণু বা আয়নের সর্ববহিঃপ্ত কক্ষে ৮ টি ইলেকট্রন আছে তাদের স্থায়িত্ব সর্বাধিক।
Na পরমাণুর
ইলেকট্রনীয় বিন্যাস 2, 8, 1 এখন Na পরমাণু তার সর্ববহিঃস্থ কক্ষ থেকে ১ টি ইলেকট্রন
বর্জনের মাধ্যমে Na+ আয়নে পরিণত হয়, তখন তার ইলেকট্রনীয় বিন্যাস হয়
2, 8। যেহেতু Na+ আয়নের সর্ববহিঃস্থ কক্ষে ৪ টি ইলেকট্রন আছে, তাই অন্তক
সূত্রানুযায়ী এটির স্থায়িত্ব Na পরমাণু অপেক্ষা বেশি।
সোডিয়াম ক্লোরাইডের (NaCl) ক্ষেত্রে আণবিক ওজনের পরিবর্তে সাংকেতিক ওজন কথাটি ব্যবহার করা সঙ্গত কেন?
উত্তরঃ সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) যৌগটি একটি
আয়নীয় যৌগ। তাই অসংখ্য Na+ ও Cl- আয়ন পরস্পরের কাছাকাছি আসে
এবং স্থির তড়িৎ আকর্ষণ দ্বারা আকর্ষিত হয়ে সোডিয়াম ক্লোরাইড কেলাস তৈরি করে। অর্থাৎ
সোডিয়াম ক্লোরাইড-এর কেলাসে পৃথক অণুর কোনো অস্তিত্ব নেই। শুধুমাত্র NaCl সংকেত দ্বারা
যৌগটিকে প্রকাশ করা হয়। তাই Na ও Cl-এর পারমাণবিক ওজনের যোগফলকে যৌগটির সাংকেতিক ওজন
বলাই যুক্তিযুক্ত হবে।
$ads={2}
সমযোজ্যতা কাকে বলে?
উত্তরঃ একই বা ভিন্ন মৌলের দুটি পরমাণু নিকটবর্তী
নিষ্ক্রিয় মৌলের ন্যায় সুস্থিত ইলেকট্রন বিন্যাস লাভের উদ্দেশ্যে ভূমিস্তরে বা উদ্দীপ্ত
শক্তিস্তরে তাদের সর্ববহিঃস্থ কক্ষে উপস্থিত ইলেকট্রনগুলিকে সমভাবে ব্যবহার করে নিজেদের
মধ্যে রাসায়নিকভাবে মিলিত হবার যে ক্ষমতা অর্জন করে, তাকে সমযোজ্যতা বলে।
সমযোজী বন্ধন ও সমযোজী যৌগ কাকে বলে?
উত্তরঃ দুটি পরমাণু এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড়কে
সমানভাবে ব্যবহার করে যে বন্ধন তৈরি করে, তাকে সমযোজী বন্ধন বলে এবং সমযোজী বন্ধন দ্বারা
সৃষ্ট যোগগুলিকে সমযোজী যৌগ বলে।
সমযোজী যৌগের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তরঃ সমযোজী যৌগের বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ-
ভৌত অবস্থাঃ সাধারণ উষ্ণতা ও চাপে এই যৌগগুলি সাধারণত
তরল বা গ্যাসীয় হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যদি আণবিক গুরুত্ব বেশি হয়, তাহলে এদের কঠিন
অবস্থাতেও পাওয়া সম্ভব।
দ্রাব্যতাঃ বেশিরভাগ সমযোজী যৌগগুলি অণুবীয় দ্রাবক
(যেমন- বেঞ্জিন)-এ সাধারণত দ্রাব্য হয়। ব্যতিক্রন-ইথানল, HCI ইত্যাদি সমযোজী যৌগ হওয়া
সত্ত্বেও জলে দ্রাব্য।
তড়িৎ পরিবাহিতাঃ সাধারণত বিশুদ্ধ সমযোজী যৌগগুলি তড়িৎ
পরিবহণে অক্ষম হয়। ব্যতিক্রম HCl-এর জলীয় দ্রবণ তড়িৎ পরিবহণ করে।
গলনাঙ্ক
ও স্ফুটনাঙ্কঃ সাধারণত
সমযোজী যৌগগুলি নিজেদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে দুর্বল বন্ধন দ্বারা আবদ্ধ থাকে বলে এদের
গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক তড়িৎযোজী যৌগগুলির থেকে কম হয়। ব্যতিক্রম হীরক, SiC ইত্যাদি।
চিনির জলীয় দ্রবণ তড়িৎ পরিবহণ করতে পারে না, কিন্তু সোডিয়াম ক্লোরাইডের জলীয় দ্রবণ পারে, কেন?
উত্তরঃ সোডিয়াম ক্লোরাইড আয়নীয় যৌগ হওয়ায়
জলীয় দ্রবণে এটি বিয়োজিত হয়ে Na+ ও Cl- আয়ন মুক্ত করে। এই
আয়নগুলি তড়িৎ পরিবহণ করতে পারে বলে সোডিয়াম ক্লোরাইডের জলীয় দ্রবণ তড়িৎ পরিবহণ
করে।
অপরদিকে, চিনির
জলীয় দ্রবণ আয়নে বিয়োজিত হয় না বলে তড়িৎ পরিবহনে অক্ষম হয়।
সমযোজী যৌগগুলির রাসায়নিক বিক্রিয়া ধীরগতিতে সম্পন্ন হয় কেন?
উত্তরঃ সমযোজী যৌগের অণুগুলির মধ্যে উপস্থিত
সমযোজী বন্ধন ভাঙার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি, সময় এবং কোনো কোনো যৌগের ক্ষেত্রে অনুঘটকের
প্রয়োজন হয় না। আবার, একটি সমযোজী বন্ধন ভেঙে নতুন সমযোজী বন্ধন তৈরি হলে প্রয়োজনীয়
সময়েরও দরকার হয়। তাই সমযোজী যৌগসমূহের রাসায়নিক বিক্রিয়া সাধারণত ধীরগতিতে সম্পন্ন
হয়।
ধ্রুবীয় সমযোজী বন্ধন বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ এই প্রকার সমযোজী বন্ধন সাধারণত তখন
দেখা যায় যখন বন্ধন সৃষ্টিকারী পরমাণু দুটির মধ্যে তড়িৎ ঋণাত্মকতার পার্থক্য দেখা
যায়। তড়িৎ ঋণাত্মকতার এই পার্থক্যের জন্য বেশি তড়িৎ ঋণাত্মক পরমাণুটি বন্ধন ইলেকট্রন
জোড়কে নিজের দিকে বেশি আকর্ষণ করে। ফলে বেশি তড়িৎ ঋণাত্মক মৌলটি আংশিক ঋণাত্মক আধানপ্রাপ্ত
হয় এবং তুলনামূলকভাবে কম তড়িৎ ঋণাত্মক মৌলটি আংশিক ধনাত্মক আধানে আহিত হয়। ফলস্বরূপ
বন্ধনটি ধ্রুবীয়তা লাভ করে। এই ধরনের সমযোজী বন্ধনকে ধ্রুবীয় সমযোজী বন্ধন বলে।
$ads={1}
আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধনের দুটি পার্থক্য লেখো।
আয়নীয় বন্ধন |
সমযোজী বন্ধন |
আয়নীয় বন্ধন তড়িৎ ধনাত্মক মৌলের ইলেকট্রন
বর্জন ও তড়িৎ ঋণাত্মক মৌলের ইলেকট্রন গ্রহণের মাধ্যমে তৈরি হয়। |
এই প্রকার বন্ধনে বন্ধন সৃষ্টিকারী
দুটি পরমাণু সমসংখ্যক ইলেকট্রন বিনিময়ের মাধ্যমে ইলেকট্রন জোড় সৃষ্টি করে এবং এই
ইলেকট্রন জোড়কে সমানভাবে ব্যবহার করে সমযোজী বন্ধন তৈরি করে। |
স্থির তাড়িতিক আকর্ষণ বলের দ্বারা
দুটি বিপরীত আধানযুক্ত আয়নগুলি যুক্ত থাকে। |
বিনিময়ের মাধ্যমে সৃষ্ট ইলেকট্রন জোড়কে
সমানভাবে ব্যবহার করে পরমাণুগুলি সংযুক্ত থাকে। |
আয়নীয় বন্ধনের নির্দিষ্ট অভিমুখ নেই। |
সমযোজী বন্ধনের অভিমুখ আছে। |
আয়নীয় যৌগগুলি সমবয়তা ধর্ম প্রদর্শন
করে না। |
সমযোজী যৌগগুলি সমবয়তা ধর্ম প্রদর্শন
করে না। |
লুইস ডট চিত্রের সাহায্যে NH3 অণুর উৎপত্তি ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ NH3 অণু সৃষ্টির সময় তিনটি
হাইড্রোজেন (H) পরমাণু তাদের ১টি করে ইলেকট্রন এবং একটি নাইট্রোজেন (N) পরমাণু তার
তিনটি ইলেকট্রনকে সমানভাবে ব্যবহার করে, অর্থাৎ প্রতিটি হাইড্রোজেন পরমাণু পৃথকভাবে
নাইট্রোজেন-এর তিনটি ইলেকট্রনকে ব্যবহার করে সমযোজী বন্ধন তৈরি করে। এর ফলে নাইট্রোজেন
নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাস নিয়ন (Ne)-এর ন্যায় ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে এবং তিনটি
হাইড্রোজেন পরমাণু পৃথক পৃথকভাবে নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয় গ্যাস হিলিয়ামের (He) ন্যায়
ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে স্থায়িত্ব অর্জন করে। এছাড়াও নাইট্রোজেন পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ
কক্ষে একজোড়া ইলেকট্রন কোনোরূপ বন্ধনে অংশগ্রহণ না করায় নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড়রূপে
অবস্থান করে।
লুইস ডট চিত্রের সাহায্যে অ্যাসিটিলিন (C2H4) অণুর গঠন ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ অ্যাসিটিলিনের (C2H4)
ক্ষেত্রে দুটি কার্বন (C) পরমাণু নিজেদের সর্ববহিঃস্থ কক্ষের 4টি ইলেকট্রনের মধ্যে
তিনটি ইলেকট্রনকে (দুটি কার্বনের মোট ৬টি) ব্যবহার করে সমযোজী ত্রিবন্ধন (কার্বন-কার্বন)
তৈরি করে। অপর একটি করে ইলেকট্রনকে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সঙ্গে ব্যবহার করে ইলেকট্রন
জোড় গঠন করে। ফলে কার্বন পরমাণুগুলি পৃথকভাবে নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাস নিয়ন (Ne)
এর মতো এবং হাইড্রোজেন পরমাণু দুটি নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাস হিলিয়াম (He)-এর মতো ইলেকট্রন
বিন্যাস লাভ করে। এর ফলস্বরূপ অ্যাসিটিলিন অণুতে দুটি C-H বন্ধন উপস্থিত আছে।
👉 Also read:
পশ্চিমবঙ্গমধ্য শিক্ষা পর্ষদের ভৌত বিজ্ঞানের আলো অধ্যায়ের ব্যাখ্যাসহ প্রশ্নোত্তর
পশ্চিমবঙ্গমধ্য শিক্ষা পর্ষদের ভৌত বিজ্ঞানের গ্যাসের আচরণ অধ্যায়ের ব্যাখ্যাসহ প্রশ্নোত্তর
রাসায়নিক বন্ধন অধ্যায়ের বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ)
$ads={2}
১। আয়নীয় যৌগগুলি বেশি পরিমাণে দ্রাব্য হবে?
ক) আ্যালকোহলে
খ) জলে
গ) ইথারে
ঘ) বেঞ্জিনে
উত্তরঃ খ)
জলে।
২।
নিম্নলিখিত কোনটি একটি পোলার দ্রাবক?
ক) জল
খ) ক্লোরোফর্ম
গ) বেঞ্জিন
ঘ) ইথার
উত্তরঃ ক)
জল।
৩। কোন বিজ্ঞানী আয়নীয় বন্ধনের ধারণা দেন?
ক) লুইস
খ) কোসেল
গ) ডালটন
ঘ) অ্যাভোগাড়ো
উত্তরঃ খ)
কোসেল।
৪। নিম্নলিখিত কোনটির গলনাঙ্ক সর্বাধিক?
ক) মোম
খ) NaCl
গ) ন্যাপথলিন
ঘ) চিনি
উত্তরঃ খ)
NaCl
৫। যোজ্যতার ইলেকট্রনীয় তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন-
ক) বর্ন ও হেবার
খ) অ্যাভোগাড্রো
গ) লুইস ও কোসেল
ঘ) ডালটন
উত্তরঃ গ)
লুইস ও কোসেল।
৬। আয়নীয় যৌগের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত কোনটি ব্যবহৃত হয়-
ক) সংকেত ওজন
খ) পারমাণবিক
ওজন
গ) আপেক্ষিক
ওজন
ঘ) আণবিক ওজন
উত্তরঃ ক)
সংকেত ওজন।
৭। নিম্নলিখিত কোনটি একটি আয়নীয় যৌগ—
ক) HCl
খ) H2O
গ) C2H2
ঘ) MgCl2
উত্তরঃ ঘ)
MgCl2
$ads={1}
৮। আয়নীয় যৌগগুলি কোন অবস্থায় তড়িৎ পরিবহণ করে?
ক) গ্যাসীয়
অবস্থায়
খ) কেবলমাত্র
গলিত অবস্থায়
গ) কঠিন অবস্থায়
ঘ) গলিত বা
জলে দ্রবীভূত অবস্থায়
উত্তরঃ ঘ)
গলিত বা জলে দ্রবীভূত অবস্থায়।
৯। কাদের মধ্যে আয়নীয় বন্ধন গঠিত হয়?
ক) দুটি ভিন্ন
অধাতব মৌলের পরমাণুর মধ্যে
খ) দুটি ভিন্ন
ধাতব মৌলের পরমাণুর মধ্যে
গ) একটি ধাতব
ও একটি অধাতব মৌলের পরমাণুর মধ্যে
ঘ) একই ধাতব
মৌলের দুটি পরমাণুর মধ্যে
উত্তরঃ গ)
একটি ধাতব ও একটি অধাতব মৌলের পরমাণুর মধ্যে।
১০। কোন প্রকার বন্ধনের ক্ষেত্রে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিমুখ থাকে না?
ক) তড়িৎযোজী
খ) অসমযোজী
গ) সমযোজী
ঘ) সবগুলি
উত্তরঃ ক)
তড়িৎযোজী।
১১। তড়িৎযোজী বন্ধন গঠন করার সময় কীসের আদান প্রদান করা হয়?
ক) পজিট্রন
খ) ইলেকট্রন
গ) নিউট্রন
ঘ) প্রোটন
উত্তরঃ খ)
ইলেকট্রন।
১২। আয়নীয় যৌগগুলি সাধারণ উষ্ণতায় কোন ভৌত অবস্থায় থাকে?
ক) তরল
খ) গ্যাসীয়
গ) কেলাসাকার
কঠিন
ঘ) প্লাজমা
উত্তরঃ গ)
কেলাসাকার কঠিন।
১৩। দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহাত হয় এরূপ একটি তড়িৎযোজী যৌগ হল-
ক) কেরোসিন
খ) চিনি
গ) জল
ঘ) খাদ্যলবণ
উত্তরঃ ঘ)
খাদ্যলবণ।
১৪। আয়নীয় যৌগের গলনাঙ্ক সমযোজী যৌগগুলির তুলনায়-
ক) বেশি হয়
খ) কম হয়
গ) সমান হয়
ঘ) বেশি বা
কম হতে পারে
উত্তরঃ ক)
বেশি হয়।
১৫। দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হয় এমন একটি সমযোজী যৌগ হল-
ক) চক
খ) জল
গ) খাদ্যলবণ
ঘ) কাপড় কাচার
সোডা
উত্তরঃ খ)
জল।
১৬। সমযোজী বন্ধনে কয়টি ইলেকট্রন উপস্থিত থাকে?
ক) ২ টি
খ) ৪ টি
গ) ৬ টি
ঘ) ৮ টি
উত্তরঃ গ)
৬ টি।
১৭। নিম্নলিখিত কোন সমযোজী যৌগটি জলে অদ্রাব্য?
ক) ইউরিয়া
খ) চিনি
গ) ইথানল
ঘ) বেঞ্জিন
উত্তরঃ ঘ)
বেঞ্জিন।
১৮। নিম্নলিখিত কোনটি সমযোজী উদ্বায়ী পদার্থ?
ক) গ্লুকোজ
খ) HCl
গ) চিনি
ঘ) ন্যাপথলিন
উত্তরঃ ঘ)
ন্যাপথলিন।
$ads={2}
১৯। নিম্নলিখিত কোনটিতে সমযোজী দ্বিবন্ধন উপস্থিত?
ক) NH3
খ) CO2
গ) CH4
ঘ) H2O
উত্তরঃ খ)
CO2
২০। সমযোজী বন্ধনের ধারণা কে দেন?
ক) লুইস
খ) আরহেনিয়াম
গ) অ্যাভোগাড্রো
ঘ) কেলভিন
উত্তরঃ ক) লুইস।
মনে রাখতে হবেঃ
- আয়নীয় যৌগগুলির গলনাঙ্ক সাধারণত অত্যন্ত বেশি হয়।
- আয়নীয় যৌগগুলি কঠিন অবস্থায় তড়িৎ পরিবহণ করতে পারে না।
- আয়নীয় যৌগগুলি জৈব দ্রাবকে অদ্রাব্য।
- ধাতব ও অধাতব মৌলের মধ্যে আয়নীয় বন্ধন গঠিত হয়।
- আয়নীয় বন্ধনের নির্দিষ্ট অভিমুখ নেই।
- সংকেত ওজন দ্বারা আয়নীয় যৌগের ওজন পরিমাপ করা হয়।
- বিজ্ঞানী কোসেল আয়নীয় বন্ধনের ধারণা দেন।
- আয়নীয় যৌগের কেলাস বিশেষ জ্যামিতিক আকারবিশিষ্ট।
- গ্লুকোজের জলীয় দ্রবণ তড়িৎ পরিবহণ করে না।
- ইথানল জলে দ্রবীভূত হয়।
- নাইট্রোজেন অণুতে ৩ টি সমযোজী বন্ধন থাকে।
- সমযোজী বন্ধনের নির্দিষ্ট অভিমুখ আছে।
- ইলেকট্রন জোড় সৃষ্টির মাধ্যমে সমযোজী বন্ধন গঠিত হয়।
- গ্রাফাইট হল এমন একটি সমযোজী গঠনবিশিষ্ট পদার্থ যা কঠিন অবস্থায় তড়িৎ পরিবহণ করতে পারে।
- লুইস ডট চিত্রে কেবলমাত্র যোজক ইলেকট্রন দেখানো হয়।
- মৌলের সমযোজ্যতা পরিমাপ করা হয় গঠিত ইলেকট্রন জোড় সংখ্যার দ্বারা।
- চিনি হল একটি কঠিন কেলাসাকার সমযোজী যৌগ।
- সমযোজী ত্রিবন্ধন আছে এমন একটি যৌগ হল অ্যাসিটিলিন।
- পরমাণুর সবচেয়ে বাইরের কক্ষে যোজ্যতা কক্ষ বলে।
আশা করি, এই
পোষ্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে তোমরা খুবই উপকৃত হয়েছ। এই পোষ্টটি তোমার সহপাঠীদের
মধ্যে খুব বেশি বেশি করে শেয়ার করো।