Madhyamik Bengali Suggestion 2022 Of Koni Uponnas | Koni's All Question and Answer Of WBBSE 2021-22 Test Paper | মাধ্যমিক ২০২১-২২ টেস্ট পেপার এর কোনি উপন্যাসের সকল প্রশ্নাবলীর সমাধান

 

Koni By Moti Nandi
Koni By Moti Nandi



কোনি

Koni By Moti Nandi

Madhyamik Bengali Suggestion 2022 Of Koni Uponnas 

Koni's All Question and Answer Of WBBSE 2021-22 Test Paper

 মাধ্যমিক ২০২১-২২ টেস্ট পেপার এর কোনি উপন্যাসের সকল প্রশ্নাবলীর সমাধান   



$ads={1}

৮। কমবেশি ১৫০ শব্দে দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও :       ৫  

১. জুপিটার ক্লাবে ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি কী ছিল? এগুলির উত্তরে ক্ষিতীশের বক্তব্য কী ছিল ? ৩+২

উত্তর- জুপিটারের সাঁতারুরা ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছিল তা সত্য হলেও পিছনে কিন্তু ক্রীড়ারাজনীতির হাত ছিল যথেষ্টই। অভিযোগগুলি হল—
- দক্ষ সাঁতারু শ্যামলের সময়কে আমেরিকার বারো বছরের মেয়েদের
সময়ের সঙ্গে তুলনা করে জুনিয়রদের কাছে তাকে অপমান করা।
> গোবিন্দের মতো ব্রেস্ট-স্ট্রোক বেঙ্গল রেকর্ড হোল্ডার ও ন্যাশনালে প্রতিনিধিত্বকারীকে কান ধরে ক্লাব থেকে বের করে দেবার কথা বলা। আর-এক দক্ষ সাঁতারু অসুস্থ সুহাসের বাড়ি গিয়ে তার বাবাকে যা-তা বলা। দুই মহিলা সাঁতারু অমিয়া ও বেলার পোশাক, চুলকাটা ইত্যাদি নিয়ে। মিষ্টি করা, তাদের জোর করে ব্যায়াম করানো।
> সাঁতারুদের শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস অর্জনে এবং তাদের মেজাজমর্জি বুঝতে অক্ষমতা।
> কোনো মেডেল জেতার ইতিহাস না থাকা।
* সকল জবাবে ক্ষিতীশ জানান পঁয়ত্রিশ বছর জুপিটারের সঙ্গে যুক্ত থেকে তাঁর একমাত্র লক্ষ্য ক্লাবের গৌরব বৃদ্ধি। ক্লাবের গৌরব বাড়ায় যে খেলোয়াড়রা, তাদের পারফরমেন্সের উন্নতির জন্য তিনি প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে বুঢ় ব্যবহার করেন। সাঁতারে পৃথিবী অনেক এগিয়ে গেলেও ভারতের তথা বাংলার সাফল্য অনেক পিছিয়ে। শৃঙ্খলাপরায়ণ, আদর্শবান ও দৃঢ়চেতা ক্ষিতীশ আসলে খেলোয়াড় জীবনে শৈথিল্য পছন্দ করতেন না।

২. কোনির পারিবারিক জীবনের পরিচয় দাও।

উত্তর- মতি নন্দীর ‘কোনি' উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র কনকচাঁপা পাল বা কোনি। দারিদ্র্যের অন্ধকারে তলিয়ে না গিয়ে সে কীভাবে অর্জন করেছে সাফল্যের আলো, সেটাই ‘কোনি' উপন্যাসের মুখ্য বিষয়বস্তু।

কোনির লড়াই একইসঙ্গে সংসারে দারিদ্র্যের সঙ্গে অন্যদিকে জলে প্রতিপক্ষের সঙ্গে। অভাবের সংসারে দাদার মৃত্যুর পর তার বুক ঠেলে একটিই প্রশ্ন ওঠে ‘এবার আমরা কী খাব?? আর এই খিদের যন্ত্রণাই কোনিকে সর্বত্র তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। কখনও তা নেহাতই জৈবিক, কখনও বা তা জেতার খিদে, হারানোর জেদ। আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে যারা পিছিয়ে পড়ে তাদের সংবেদনশীলতা বেশি। কোনিও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই অমিয়া বা হিয়ার মতো মেয়েদের কথাবার্তা আর কাজকর্মে সে সহজেই অপমানিত বোধ করে। 'আনস্পোর্টিং' শব্দটা কোনিকে তাতিয়ে দিয়ে দর্শক আসন থেকে জলে, জল থেকে বিজয়িনীর মঞ্চে পৌঁছে দিয়েছে। কোনি জেদি, একরোখা, পরিশ্রমী আর কষ্টসহিন্নু। জীবনে ও জলে সর্বত্রই লড়াইয়ে সে জেতে। শত বর্ণনা, অজস্র অপমানের পরও সাফল্যের পদক ঝোলে কোনিরই গলায়। কোনি বাংলার জেদি আর লড়াকু মেয়েদের প্রতীক। সমস্ত প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লাড়াই করে, কঠোর জীবনযাপন করে কোনির জীবনে এসেছে সাফল্য। ক্লাবের রাজনীতি, চূড়ান্ত অপমান, অবহেলার বিপক্ষে সে শুধু অনুশীলনে নিমগ্ন থেকেছে। লড়াকু পরিশ্রমী মানসিকতা তাকে পরিণত করেছে ‘বিজয়িনী নায়িকা তে।

$ads={2}

৩ .‘অবশেষে কোনি বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল--- কোনি কীভাবে বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল তা সংক্ষপে লেখো।

উত্তর- প্রচুর দর্শকের সামনে জুপিটার সুইমিং ক্লাবে প্রতিবছর সাঁতারের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে করে সেই কম্পিটিশনে কোনিকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। ক্ষিতীশ সকলকে দৃঢ়তার সঙ্গে জানান কোনি সুযোগ পেলে নিশ্চিতভাবে অমিয়াকে হারাবে। কমলদিঘিতে নির্দিষ্ট দিনে শুরু হয় জুপিটার ক্লাবের সাঁতার প্রতিযোগিতা। ১০০ মিটার ফ্রি স্টাইলে কোনি-সহ আরও অনেকেই যোগ দেয়। গ্যালারি ভিড়ে উপচে পড়ে। প্রতিযোগিতা শুরু হলে, জুপিটারের পক্ষ থেকে অমিয়া এবং অ্যাপোলোর পক্ষ থেকে কোনির সমর্থনে চিৎকার শুরু হয়। শুরুতে অমিয়া এগিয়ে থাকলেও ৭০ মিটারের পর থেকে সে পিছিয়ে পড়তে শুরু করে। অমিয়া প্রথম ৫০ মিটার শেষ করে ঘুরতেই টর্নেডোর মতো ছিটকে আসে কোনি। 'ফাইট, কোনি ফাইট’ ক্ষিতীশের এই স্লোগানের সঙ্গে কোনির জন্য চারদিক থেকে তখন ধ্বনিত হয় 'কাম অন বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন'। কোনি তার ছন্দোবদ্ধ হাত পায়ের ওঠানামায় হিংস্র ভঙ্গিতে অমিয়ার আগেই ফিনিশিং বোর্ড স্পর্শ করে। কোনির জয়ে ক্ষিতীশ আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান। অবশেষে সমস্ত প্রতিকূলতা পেরিয়ে কোনি বাংলার সাঁতার দলে জায়গা করে নেয়।

৪ . ক্ষিদ্দা, এবার আমরা কী খাবো?'— উদ্ধৃতিটির আলোকে কোনির যন্ত্রণাবিদ্ধ জীবনযাত্রার পরিচয় দাও। 

উত্তর- উল্লিখিত মন্তব্যটির বক্তা কোনি।

● খিদ্দা কোনিদের বাড়িতে গিয়েছিল অনুশীলনে কোনির গরহাজির থাকার খবর নিতে। সেখানে গিয়েই জানতে পারে যে, আগের রাত্রে কোনির দাদা কমলের মৃত্যু হয়েছে। কমল ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তাই তার মৃত্যুতে অসহায় কোনির মনে বেঁচে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা ধরা পড়েছে। ক্ষিদ্দা এর আগেই কোনিকে টিফিনের জন্য এক টাকা করে দিত, যা কোনি বাড়িতে দিত। এবারে তার বাড়িতেই কোনির খাওয়ার ব্যবস্থা করে ক্ষিদ্দা। স্ত্রী লীলাবতীর দোকানে তালা খোলা, ঝাঁট দেওয়া, জল তোলা এবং ফাইফরমাস খাটার কাজেও লাগিয়ে দেয়। মাইনে মাসে চল্লিশ টাকা। এ ছাড়া লন্ড্রির দোকানে সরবরাহের জন্য দর্জির দোকানের ছাঁট কাপড় কিনে তা কাটতে দেয় কোনির বাড়িতে। এতেও কোনির পরিবারের কিছু অর্থ উপার্জনের সুযোগ হয়। এভাবেই ক্ষিদা কোনি এবং তার পরিবারের পাশে দাঁড়ায়।

৫. জোচ্চুরি করে আমাকে বসিয়ে রেখে এখন ঠেকায় পড়ে এসেছে আমার কাছে'- কোনির এই অভিমানের কারণ কী? এর পরবর্তী ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

উত্তর- মাদ্রাজে জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়ন প্রতিযোগিতায় কোনি সুযোগ পেলেও তাকে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। ট্রেনে যাত্রা থেকে শুরু করে হোটেল পর্যন্ত সবাই তাকে অবহেলার চোখে দেখেছে। এমনকি বাংলার হয়ে যাঁরা পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরাও কোনির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। দায়ে পড়ে ৪ x ১০০ মিটার রিলে প্রতিযোগিতায় কোনিকে নামতে বললে সে অভিমানে আলোচ্য উক্তিটি করেছে।

মাদ্রাজে জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপ কোনির সংগ্রামী জীবনের স্মরণীয় ঘটনা। দীর্ঘ বঞ্চনা আর অবহেলার যোগ্য জবাব দিয়ে কোনি এখানে সাফল্যের চূড়ায় অবস্থান করে। মাদ্রাজে প্রতিযোগিতার শেষ বিষয় ছিল ৪ x ১০০ মিটার রিলে। মহারাষ্ট্র তখন তিন পয়েন্টে এগিয়ে। বাংলাকে ১০ পয়েন্ট সংগ্রহ করতেই হবে। না হলে চ্যাম্পিয়নের স্বপ্ন সফল হবে না। অমিয়া অসুস্থ থাকার জন্য বিকল্প সাঁতারু হিসেবে কোনির ডাক পড়ে। প্রাণবেন্দু বিশ্বাসই প্রস্তাবটা দেন। তখনই বেঙ্গলকে চ্যাম্পিয়ন করার একমাত্র অবলম্বন হয়ে ওঠে কোনি। কিন্তু বঞ্চনা আর অবহেলার গুরুভার মাথায় নিয়ে কোনি তখন বেঁকে বসেছে। সে কিছুতেই জলে নামবে না। এই সময় হিয়া কোনিকে 'আনস্পোর্টিং' বলে তিরস্কার করলে কোনির মাথায় জেদ চেপে যায়। দাঁতে দাঁত চেপে, চোয়াল শক্ত করে কোনি নেমে পড়ে জলে। মহারাষ্ট্রের প্রখ্যাত সাঁতারু রমা যোশির ঝাঁপ দেওয়ার তিন মনোবল আর হৃদয়ে পুষে রাখা অভিমানকে সম্বল করে কোনি রমা যোশিকে পিছনে ফেলে দেয়। ক্ষিতীশের মরিয়া চিৎকার 'ফাইট, কোনি ফাইট’ শেষ পর্যন্ত সত্য পরিণত হয়। কোনির গলায় ওঠে সোনার মেডেল। ক্ষিতীশের দু চোখের কোণ হিরের মতো চকচক করে ওঠে।

$ads={1}

৬. কোনি উপন্যাসের ক্ষিতীশ সিংহ চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো। 

উত্তর- মতি নন্দীর ‘কোনি' উপন্যাসে কেন্দ্রীয় চরিত্র ক্ষিতীশ সিংহ বা ক্ষিদা। উপন্যাসের নায়িকা বা মুখ্য চরিত্রের যাবতীয় কাজকর্মের চালিকাশক্তি তিনিই। তাই শেষ বিচারে, ক্ষিতীশকে কেন্দ্র করেই কোনির আবর্তন এবং উত্তরণ।

দক্ষ প্রশিক্ষক : সাঁতারের প্রশিক্ষক হিসেবে ক্ষিতীশ সিংহের দক্ষতা প্রশ্নাতীত। জহুরির দৃষ্টি তাঁর। তাই বারুণীর দিন গঙ্গার বুকে আম সংগ্রহকারী কোনির মধ্যে এক প্রতিশ্রুতিবান সাঁতারুকে খুঁজে নিতে ভুল হয়নি তাঁর। ক্ষিদা কোনিকে শুধু সাঁতারে প্রশিক্ষণ দেননি। তার মনে লড়াইয়ের খিদেটা জাগিয়ে তুলেছেন আর পেটের খিদে মেটানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।

মনস্তত্ত্ববিদ : দক্ষ মনোবিদের সব গুণ আছে ক্ষিদার। তাই বিষ্টুচরণ ধরকে তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। স্ত্রী লীলাবতীকে দিয়ে কোনির জন্য ব্যবস্থা করিয়ে নেন। আবার, কোনির কাছ থেকে সাঁতারু হিসেবে তার সেরাটা বের করে নেন মনস্তাত্ত্বিক দাওয়াই প্রয়োগ করেই।

লড়াকু মনোভাব : জুপিটার ক্ষিদাকে অপমান করেছে। পঁয়ত্রিশ বছর ধরে একনিষ্ঠ পরিসেবার বিনিময়ে দিয়েছে লাঞ্ছনা। সেসবের জবাব দিতে অ্যাপোলোর সাহায্য নিয়েছেন ক্ষিতীশ। তবুও শত্রুপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সুবিধবাদী অবস্থান নেননি তিনি। তাঁর সাফ কথা, “অ্যাপোলো কোনদিনই আমার ক্লাব হবে না,” কিন্তু কোনি “যদি সম্মান আনে তাহলে সেটা হবে অ্যাপোলোর”। বিশ্বাসঘাতকতা ক্ষিদ্দার ডিএনএ-তে নেই, যা আছে তা হল জবাব দেওয়ার ইচ্ছা। নীতিনিষ্ঠ, জেদি আর লড়াকু ক্ষিতীশ সিংহ আদর্শ শিক্ষকের গৌরবময় আসনে চির অধিষ্ঠিত।

৭. ‘এটা বুকের মধ্যে পুষে রাখুক।' বুকের মধ্যে কী পুষে রাখার কথা বলা হয়েছে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কী পুষে রাখার কথা ভাবছেন?

উত্তর- 'কোনি' উপন্যাসে ক্ষিতীশের সঙ্গে কোনি গিয়েছিল চিড়িয়াখানা দেখতে। সেখানে ক্ষিতীশের কাছে খাবার থাকলেও জল ছিল না। কিছুটা দূরে থাকা স্কুলের মেয়েদের কাছে কোনি জল আনতে যায়। কিন্তু শিক্ষিকা তাকে অপমান করে ফিরিয়ে দেয়। এই অবস্থায় সেই মেয়েদের মধ্যেই থাকা হিয়া জলভরা প্লাস্টিকের দুটো গ্লাস নিয়ে তাদের কাছে আসে কিন্তু কোনি হাত দিয়ে হিয়ার গ্লাসে আঘাত করে। হাত থেকে তা ছিটকে পড়ে। "চাই না তোমাদের জল। আমার কলের জলই ভালো।” –কোনি এই বলে প্রবলভাবে প্রত্যাখ্যান করে হিয়াকে। ক্ষিতীশ চেয়েছিল এই রাগটাই মনের মধ্যে পুষে রাখুক কোনি।

> ক্ষিতীশ হিয়ার প্রতি কোনির আচরণকে সমর্থন করতে পারেনি। কিন্তু কোনিকে দারুণ বকবে ভেবেও ক্ষিতীশ শেষপর্যন্ত কিছুই বলেনি। কারণ সে বুঝে গিয়েছিল যে হিয়াই কোনির ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বী। রবীন্দ্র সরোবরের সাঁতার প্রতিযোগিতায় হিয়ার সাঁতার ক্ষিতীশ দেখেছে। বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবে গিয়েও সে হিয়ার ট্রেনিং দেখে এসেছে। এখান থেকেই ক্ষিতীশের মনে হয়েছে যে হিয়ার প্রতি কোনির হিংস্র আক্রোশটাকে ভোঁতা করে দেওয়া ঠিক হবে না। এই আক্রোশ কোনি তার বুকের মধ্যে পুষে বাখুক যা তাকে হিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে শক্তি জোগাবে এবং সাফল্যের পথে নিয়ে যাবে।

৮.প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের অবদান সংক্ষেপে লেখো।

৯.‘কোনি’ উপন্যাসের শুরুতে গঙ্গার ঘাটের যে বর্ণনা রয়েছে তার একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

উত্তর- প্রখ্যাত ক্রীড়াসাহিত্যিক মতি নন্দী রচিত 'কোনি' উপন্যাসে বারুণী তিথিতে গঙ্গার ধারের নিখুঁত ছবি ফুটে উঠেছে। বারুণী হল শতভিষা নক্ষত্রযুক্ত চৈত্রমাসের কৃষ্ণত্রয়োদশী তিথি।

'কোনি' উপন্যাসে দেখা যায়, গঙ্গার ধারে সেদিন থই থই ভিড়। বয়স্করা কাঁচা আম মাথার উপর ধরে, ডুব দিয়ে উঠেই তা ফেলে দিচ্ছেন, কেউ বা তা দূরে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছেন।

সেই আম কুড়িয়ে নেওয়ার জন্য ছোটো ছোটো দলে ভাগ হয়ে ছেলেরা জলে নেমে অপেক্ষা করছে। কেউ গলাজলে দাঁড়িয়ে আছে, কেউ বা দূরে ভেসে রয়েছে। আম দেখলেই তাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যাচ্ছে। গঙ্গাই ভাটা চলায় স্নানশেষে অনেকেই কাদা মাড়িয়ে একরাশ বিরক্তি দিয়ে উঠে আসছিলেন। ঘাটের মাথায়, ট্রেন লাইনের দিকে মুখ করে বসে থাকা যে বামুনরা পয়সা নিয়ে জামাকাপড় রাখে, গায়ে মাখার তেল দেয়, কপালে চন্দনের ছাপ আঁকে তাদের কাছেও আজ ভিড়। রাস্তার একধারে ভিখারিরা বসে থাকে। দুধারের ছোটো ছোটো নানান দেবদেবীর দুয়ারে আর শিবলিঙ্গে গঙ্গা জল দিতে দিতে, কাঠের প্লাস্টিকের, লোহার, খেলনার, সাংসারিক জিনিসপত্রের দোকানগুলির দিকে তাকাতে তাকাতে অধিকাংশ মানুষই বাড়ি ফিরে যান। অনেকে আবার বাজার থেকে ওল থোড়, লেবু জাতীয় কিছু কিনে নেন।

$ads={2}

১০. 'কোনি' উপন্যাস অবলম্বনে কোনির সাফল্যের পিছনে ক্ষিতীশ সিংহের অবদান লেখো। 

উত্তর-মতি নন্দীর ‘কোনি' উপন্যাসে ক্ষিতীশ সিংহ ওরফে ক্ষিদ্দার সঙ্গে কনকচাপা পাল ওরফে কোনির পারস্পরিক সম্পর্ককে কোনো নির্দিষ্ট পরিচয়ে পরিচায়িত করা যায় না। ক্ষিদা একাধারে কোনির শিক্ষক, জীবনপথের পথপ্রদর্শক, দাদা এবং কিছুটা পিতৃস্থানীয় অভিভাবক।

কোনিকে শুধু সাঁতারের প্রশিক্ষণ দিয়েই দায় সারেননি ক্ষিতীশ। তার খাওয়া-দাওয়া, পুষ্টির প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রেখেছেন। সেজন্য সাধ্যমতো যাবতীয় ব্যবস্থাও করেছেন। তিনি জানেন, দক্ষ ক্রীড়াবিদ আদতে একজন সাধক। কোনির সাধনপথে যাতে কোনো বিঘ্ন না-আসে, তার মনঃসংযোগে যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য তিনি কোনির রোজগার থেকে খাবার—সবদিকেই নজর রেখেছেন। দক্ষ মনোবিদের মতো কোনির ভিতরকার অভিমানকে জেদে পরিণত করেছেন। সেজন্য কখনও তিনি হয়ে উঠেছে কড়া শিক্ষক, কখনওবা সহমর্মী সঙ্গী।
ক্ষিদ্দা আর কোনির সম্পর্কের এই অত্যাশ্চর্য রসায়নই শেষপর্যন্ত কোনিকে ‘ফাইট’ করতে শিখিয়েছে, তাকে পৌঁছে দিয়েছে সাফল্যের শিখরে।

১১.দারিদ্র্য  আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনির যে লড়াই তা সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তর- কোনি জন্মসূত্রেই ছিল এক জাত ফাইটার। শ্যামপুকুর বস্তির এই মেয়েটি জীবনের শুরু থেকেই টিকে থাকার লড়াই করতে অভ্যস্ত। জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই তার লড়াই শুরু হয়েছিল দারিদ্র্য আর দুর্ভাগ্যের সঙ্গে। বাবার মৃত্যুর পর দাদা হাল ধরলেও সংসারের নৌকায় গতি আসেনি। তাই অবিরাম হাঁটা প্রতিযোগিতায় শেষ পর্যন্ত টিকে থাকার জন্য দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে যায় কোনি। রবীন্দ্র সরোবরে অনুষ্ঠিত সাঁতার প্রতিযোগিতায় সে হিয়া মিত্রের কাছে হেরে যায় শুধুই টেকনিক না-জানার কারণে। কিন্তু যথার্থ ফাইটারের মতোই সে এই পরাজয় মেনে নিতে পারেনি।
ক্ষিতীশ তাকে সাঁতার শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব নেওয়ার পর শুরু হয় কোনির জীবনের দ্বিতীয় পর্যায়ের লড়াই। প্রথমে জুপিটার ক্লাবে ভরতির পরীক্ষা দিয়ে সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েও, শুধু স্থানাভাবের কারণ দেখিয়ে তাকে ভরতি নেওয়া হয় না। ক্ষিতীশের সঙ্গে কোনির ভাগ্য জড়িয়ে পড়ায় একের পর এক প্রতিবন্ধকতা তাদের পথ রোধ করে দাঁড়ায়। জুপিটার সুইমিং ক্লাবের প্রতিযোগিতায় কোনির এন্ট্রি গৃহীত না-হলেও ক্ষিতীশের চেষ্টায় সে সকলকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় তার প্রতিভা ও অবস্থান। স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে সে চক্রান্তের শিকার হয়ে দু-বার ডিসকোয়ালিফাই ও একবার প্রথম হয়েও দ্বিতীয় বলে ঘোষিত হয়। ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে মাদ্রাজে গিয়েও তাকে অকারণে বসিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি, অন্য সাঁতারুদের কাছ থেকে চোর অপবাদও জোটে তার। কিন্তু অমিয়ার পরিবর্ত হিসেবে জলে নামার সুযোগ পেয়ে সে নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছিল। এভাবেই গঙ্গার এক সাধারণ সাঁতারু থেকে জাতীয় স্তরে সাফল্যের শিখর স্পর্শ করা এক অপ্রতিহত জীবনযোদ্ধার নাম হয়ে ওঠে কোনি।

১২.'কম্পিটিশনে পড়লে মেয়েটাতো আমার পা ধোয়া জল খাবে -বক্তা কে? কী প্রসঙ্গে তার এই উক্তি? এই উক্তিতে বক্তার কীরূপ মনোভাব ফুটে উঠেছে?

উত্তর- মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের সপ্তম পরিচ্ছেদে বাংলার চ্যাম্পিয়ন সাঁতারু অমিয়া তার সহ-সাঁতারু বেলাকে এই কথাগুলি বলেছে।

→ ক্ষিতীশ সিংহ কমলদিঘিতে কোনিকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন। সেইসময় অ্যাপোলো ক্লাব থেকে বেরিয়ে আসে অমিয়া এবং বেলা। তারা একসময় ক্ষিতীশের ছাত্রী ছিল, কিন্তু ক্ষিতীশকে তারা ঘোর অপছন্দ করে। ক্ষিতীশের বর্তমান ছাত্রী সদ্য সাঁতার শিখতে আসা কোনির হাতের স্ট্রোক নিয়ে তারা কৌতুক করে। তখনই অহংকারী অমিয়া এই মন্তব্যটি করে।

→ দীর্ঘদিনের সাঁতারু অমিয়া বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন। অপরদিকে কোনি সদ্য সাঁতার শিখতে শুরু করেছে। তুলনা করতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই দেখা যায়, অমিয়া অনেক দক্ষ। একজন নবীন সাঁতারুর সাঁতার কাটার পদ্ধতি নিয়ে এমন মন্তব্য, তার ঔদ্ধত্য এবং অহংবোধেরই পরিচয় দেয়। অহংকার যে পতনের কারণ হতে পারে এটা হয়তো অমিয়ার জানা ছিল না। কাহিনির শেষে অমিয়ার সেই পতন দেখা যাবে। হরিচরণের মাধ্যমে তাদের কাছে খবর ছিল – “ক্ষিদা নাকি জুপিটারকে ডাউন দেবে ওই মেয়েটাকে দিয়ে।” কোনিকে বিপক্ষ ধরে নিয়ে অমিয়া তাকে তুচ্ছ ও হেয় করতে চেয়েছে। তার এই আচরণ একদমই খেলোয়ারসুলভ নয়। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অমিয়ার গর্ব ও অহংকারের চরম প্রকাশ ঘটেছে।
Newton Hossain

Newton Hossain, the founder of this blog, is a Lecturer of the English Language and also loves to explain Life science and Geography.

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post