![]() |
মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক |
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, তোমরা খুব ভালোই আছো। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা পর্ষদ শ্রেণীভিত্তিক মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক সপ্তম শ্রেণি ইতিহাস Model Activity Task Class 7 History এর প্রশ্ন-পত্র বিতরণ করেছে। হোম টাক্স হিসেবে উত্তর লিখে তোমাদের নিজ নিজ বিদ্যালয় জমা দিতে হবে। আমরা তোমাদের পাশে বন্ধুর মতো হাজির হয়ে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক এর সমাধান করে দিলাম । আশা করি তোমরা উপকৃত হবে।
Digital Porasona -এর Online Educational Platform- এর সকলকে সু-স্বাগতম। আমাদের এখানে তোমরা পাবে নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সকল বিষয়ের অধ্যায়ভিত্তিক ও অনুশীলনীর খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা ও আলোচনা। তাছাড়া বাংলা ব্যাকরণ ও English Grammar এর সুস্পষ্ট, সহজ-সরল আলোচনা।
আজকের পোষ্টে আমরা 2021 এর Model Activity Task Class 7 এর History এর যথাযথ সমাধান নিয়ে আলোচনা করেছি। আগামীতে আমরা পরবর্তী Model Activity Task -এর সমাধান নিয়ে হাজির হবো। তবে এসো আমরা আজকের বিষয়ে প্রবেশ করি।
Model Activity Task Class 7 History
মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক সপ্তম শ্রেণি ইতিহাস এর সমাধান
ইতিহাস
1. সেন যুগে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার ও প্রসার কমে গিয়েছিল- এই উক্তিটির স্বপক্ষে তিনটি বাক্য লেখ।
উত্তরঃ - পাল রাজারা বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। তাই বাংলা বুদ্ধধর্মের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়। কিন্তু সেন রাজারা ব্রাহ্মণ্য ধর্মকেই মান্য করত। সেন যুগে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের দুটি শাখা বৈদিক ধর্ম ও পৌরাণিক ধর্ম এর মিশ্রন ঘটেছিল। বল্লাল সেন রক্ষণশীল গোঁড়া ব্রাহ্মণ্য ধর্মের প্রতিষ্ঠা করেন তাই বৌধ ধর্মের অস্তিত্ব থাকলেও তা প্রধান ছিল না।
2. প্রাচীন বাংলার যে অঞ্চল ও নদীর নাম তোমরা দ্বিতীয় অধ্যায়ের পড়েছ তার তালিকা তৈরি করো।
উত্তরঃ -
প্রাচীন বাংলায় যেসব অঞ্চল গুলি আমরা দ্বিতীয় অধ্যায়ে পড়েছি সেগুলি হল - বরেন্দ্র, বঙ্গ, বাঙ্গাল, গৌর, সমতট, হরিকেল ও রাঢ। এবং যে সমস্ত নদীগুলির আমরা উল্লেখ পাই তা হল- ভাগীরথী, পদ্মা, -মেঘনা, -যমুনা ও দামোদর।
3. ভারতের সামন্ততন্ত্র কি একটি ছবি এঁকে বর্ণনা করো সামন্ততন্ত্র কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ত্রিভুজ বা পিরামিডের আকৃতি কেন জরুরি তা দু-তিন টি বাক্যে লিখ।
উত্তরঃ - ইংরাজি ফিউডালিজম কথাটির অর্থ হল সামন্ততন্ত্র। কৃষক ও রাজার মধ্যে কয়েকটি স্তর এর মাধ্যমে ভূমি ভাগ করে রাজস্ব আদায় ও শাসন পরিচালনার ব্যবস্থা কে সামন্ততন্ত্র বলে।
সামন্ততন্ত্রের ছবি আকতে হলে তা দেখায় ত্রিভুজের মত। কারণ সর্বোচ্চ স্থানে থাকেন রাজা। তার নিচের স্তরে থাকে মহাসামন্ত। তার নিচে উপ সামন্ত। এইভাবে ধাপে ধাপে বাড়তে বাড়তে শেষের স্তরে থাকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাগচাষী বা ভূমিদাস। লক্ষনীয় যে নিচ থেকে কমতে কমতে শীর্ষে একমাত্র রাজার দ্বারা ত্রিভুজ শেষ হচ্ছে যা পিরামিডের ন্যায়।
4. পাল ও সেন যুগের কি কি ফসল হতো তার তালিকা তৈরি করো। সেই ফসল গুলির কোন কোনটি এখনো চাষ করা হয়?
উত্তরঃ - পাল ও সেন যুগে যে সমস্ত ফসল চাষ করা হতো তা হলো তা হলো - ধান, সরিষা, কার্পাস, তুলো, পান-, সুপারি, এলাচ, মহুয়া এবং ফলের মধ্যে - আম, কলা, কাঁঠাল, খেজুর, ডালিম, নারকেল ইত্যাদি।
এখনো সেই ফসল গুলির মধ্যে যা চাষ করা হয় সেগুলি হল - ধান, সরিষা, এলাচ, তুলো, পান, সুপারি এবং বিভিন্ন ফল।
মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক সপ্তম শ্রেণি ইতিহাস এর সমাধান
Part-2
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ:
১. "শশাঙ্ক বৌদ্ধ বিদ্বেষী ছিলেন"-
ঠিক না ভুল তোমার উত্তরের সাপেক্ষে তিনটি বাক্যে লেখ।
উত্তর-
শশাঙ্ককে বৌদ্ধ বিদ্বেষী বলা হয় কারণ-
শশাঙ্ক ছিলেন এক গুপ্ত সম্রাট মহাসামন্ত , তিনি গৌড়ের শাসক ছিলেন।
তিনি বহু দুর রাজ্য বিস্তার করেছিলেন
এছাড়াও তিনি ধর্মে দীক্ষিত ছিলেন।
শশাঙ্ক ধর্মীয় বিশ্বাসী ছিলেন, তিনি শিবের উপাসক ছিল। তবে অনেকে 'শশাঙ্ক'- কে বৌদ্ধ বিদ্বেষী বলে মনে করেন।
শশাঙ্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় যে
" তিনি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের হত্যা করেছিলেন এবং বৌদ্ধদের পবিত্র ধর্মীয় স্থান ধ্বংস
করেছিলেন"- হর্ষবর্ধনের সভাকবি বানভট্টের রচনা 'হর্ষচরিত' এর নিন্দা করা হয়েছে।
এছাড়াও 'আর্য মঞ্জুশ্রী' নামক বৌদ্ধ ধর্ম গ্রন্থে ধর্ম বিবরণীতে তাকে বৌদ্ধ বিদ্বেষী
বলে আখ্যা দিয়েছেন।
২. সুলতান মাহমুদের ১৭ বার ভারত আক্রমণ এর পেছনে প্রকৃত কারণ কি ছিল?
উত্তর- গজনীর সুলতান মাহমুদ ১৭ বার আক্রমণ
করেছিলেন আক্রমণের মূল কারণ ছিল এদেশে ধনসম্পত্তি নিয়ে গিয়ে তার রাজ্য বিস্তার করাকরা।
সোনা মুক্তা হীরা মতি ও সোনার মূর্তি লুট করে ধন সম্পদ নিয়ে নিজো সাম্রাজ্যঃ ধন-সম্পদ শালী গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সেই উপলক্ষে সুলতান মাহমুদ ১০০০ খিষ্টাব্দ থেকে ১০২৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ১৭ বার ভারত আক্রমণ করেন।
ভারতের ঐ সময় বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন মন্দিরে অনেক অনেক ধনসম্পে পরিপুর্ণ ছিল আর ঐ সমস্ত ধন সম্পদ লুট করার উদ্দেশ্যেই তিনি ভারতে আক্রমণ করেন এবং অনেক হিন্দু মন্দির ধ্বংস করে ধনসম্পত্তি নিজের রাজ্যে নিয়ে যায় আর নিজ রাজ্য বা গজনিকে ধন-সম্পদতীশালি করে তোলেন।
৩. নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর এজন্য দুটি করে বাক্য লেখঃ
ক) মাৎস্যন্যায়
খ) খিলাফত
গ) ব্রহ্মদেয়
উত্তর-
ক) মাৎস্যন্যায়: বলতে দেশের অরাজকতা বা স্থায়ী রাজার অভাবকে বোঝানো হয়.যেমন
পুকুরের বড় মাছ ছোট মাছদের খেয়ে ফেলে তার অভাবের সময় বা অরাজকতার সময়ে, তেমনি শক্তিশালী
রাজা বা লোক দুর্বল লোকের উপর অত্যাচার করে।
বাংলায় শশাঙ্কের মৃত্যুর পর খ্রিস্টীয়
সপ্তম শতকের মধ্যভাগ থেকে অষ্টম শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত প্রায় ১০০ বছর ধরে চলেছিল বিভিন্ন
ক্ষত্রিয়, সম্ভ্রান্ত লোক ,ব্রাহ্মণ এবং বণিক ইচ্ছামত নিজেদের এলাকা শাসন করতো এবং
দুর্বল ও গরিব লোক এদের উপর অত্যাচার চালাত যা বাংলায় ,মাৎস্যন্যায় নামে পরিচিত বা
ওই ১০০ বছর ম্যাৎস্যন্যায় যুগ নামে পরিচিত ।
খ) খিলাফত: মুহাম্মদের মৃত্যুর পর ইসলাম জগতের নেতৃত্ব দেবার মত কোন উপযুক্ত সুলতান ছিল না। তবে প্রিয় প্রধান চার সঙ্গী( আবু বাক্কার সিদ্দিকি, উমর বিন কেতাব, উস্মান বিন আরফান এবং আলি বিন আবু তালিব )একে একে নেতা নির্বাচিত হয়, এদের বলা হতো খলিফা। খলিফা একটি আরবি শব্দ, তার অর্থ হচ্ছে প্রতিনিধি বা উত্তরাধিকারী। মোহাম্মদের প্রথম খলিফা ছিলেন আবু বক্কর। খলিফা ইসলাম ধর্মের ধর্মীয় জগতের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতা হিসাবে বিবেচিত হন। যেসব অঞ্চলে ইসলাম ধর্মে ক্ষমতা ছড়িয়ে পড়ে ও প্রভাবশালী হয়ে ওঠে সেগুলি হল- 'দার -উল- ইসলাম' এর পুরোটাই তাদের আয়ত্তে চলে যায় এবং তারা শাসন করতে থাকে। তাদের শাসনের এবং অধিকারের অঞ্চল খিলাফত নামে পরিচিত।
গ) ব্রহ্মদেয়: সাধারণত রাজা, অভিযারা, অথবা সম্পদশালী ব্যক্তি ,ধনমান লোকেরা ধার্মিকতার প্রভাবে নিজেদের পাপ মুক্ত করার জন্য নিজেদের জমি ব্রাহ্মণদের দান করতো এবং তার কোন কর নিত না। তারা মনেকরত বা বিশ্বাস করত যে, এতে তাদের পূর্ণ লাভ হয় আর এই প্রথাকে বলা হয় ব্রহ্মদেয়।
আমাদের পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই পোষ্টটি সহপাঠীদের মাঝে শেয়ার করে তাদেরকেও দেখার সুযোগ করে দাও। উপরিক্তি কোন প্রশ্নোত্তরে সমস্যা থাকলে আমাদের Comment Section-এ অবশ্যই জানাও। আমরা তা সমাধানে সদা তৎপর ও সচেষ্ট থাকব, ধন্যবাদ।